ইরাকের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মসুলকে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেটের (আইএস) হাত থেকে উদ্ধার করতে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ইরাক সরকার। সোমবার এ অভিযান শুরু হয়। পশ্চিমা দেশগুলোর বিমান হামলার সাহায্য নিয়ে প্রায় ৩৪ হাজার ইরাকি সেনা, শিয়া মিলিশিয়া ও হাজার পাঁচেক কুর্দি পেশমেরগা যোদ্ধা চারদিক দিকে মসুলের দিকে এগোচ্ছে। গতকাল ইরাকি সেনাবাহিনী ও কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী পৃথক বিবৃতিতে অভিযানের প্রথম ২৪ ঘণ্টায় পাওয়া সাফল্য তুলে ধরে। এসব বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মসুলের পূর্ব, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকের মোট ২০টি গ্রাম জঙ্গিদের দখল থেকে পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। ইরাকি সেনাবাহিনী দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে এবং পেশমেরগা পূর্ব দিক থেকে মসুলমুখী অভিযান শুরু করেছে। পেশমেরগা বাহিনী জানিয়েছে, তারা কুর্দি নিয়ন্ত্রিত প্রদেশের রাজধানী এরবিল থেকে মসুলগামী পশ্চিমমুখী মহাসড়কের ৮০ কিলোমিটার অংশের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করেছে। কিন্তু এ অভিযানের সম্ভাব্য পরিণতি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ইউরোপ। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তাবিষয়ক কমিশনার জুলিয়ান কিং জার্মান পত্রিকা ডি ভেলটকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘মসুলে যে ৫ হাজারের মতো আইএস যোদ্ধা রয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যায় ইউরোপীয় মুসলিম রয়েছে। এ সংখ্যা কমবেশি ২ হাজার ৫০০ হতে পারে। এখন বিতাড়িত জিহাদিদের অনেকেই ইউরোপে ঢুকে পড়তে পারে। তিনি বলেন, পালানো জিহাদিদের সবাই যে পালিয়ে ইউরোপে ঢুকতে পারবে তা হয়তো নয় কিন্তু অল্প কিছু ঢুকলেও ‘চরম হুমকি’ তৈরি হবে। এজন্য আমাদের ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।’ মসুলে ১৫ লাখের মতো বেসামরিক লোকের বাস। জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংস্থা সাবধান করেছে, চলতি সামরিক অভিযানের ফলে আগামী কয়েক সপ্তাহ বা মাসে ১০ লাখ লোক বাস্তচ্যুত হতে পারে। আন্তর্জাতিক রেড ক্রস ভয় পাচ্ছে, আইএস যোদ্ধারা বেসামরিক লোকজনকে মানবঢাল হিসেবে ব্যবহারের জন্য তাদের আটকে রাখার চেষ্টা করবে। তবে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র পিটার কুক বলেছেন, মসুলে আইএসের কয়েক হাজার যোদ্ধা পালানোর চেষ্টা করবে, নাকি শেষ পর্যন্ত লড়বে— তা এখনো বোঝা যাচ্ছে না।
তুরস্ক সীমান্তে আইএসের হাতছাড়া ১২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা! : তুরস্ক সীমান্তসংলগ্ন সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে আইএসের বিরুদ্ধে তুর্কি বাহিনীর চলমান অভিযানে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জঙ্গিরা। ৩ সেপ্টেম্বর সিরিয়ায় প্রবেশ করে তুরস্কের ট্যাংক ও সাঁজোয়া বহর। ‘ইউফ্রেটিস শিল্ড’ অপারেশন নামের ওই অভিযান শুরুর পরই সীমান্তসংলগ্ন এলাকা থেকে পিছু হটতে থাকে আইএস। ওই অভিযান শুরুর পর এ পর্যন্ত ১২০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা আইএসের হাতছাড়া হয়েছে। বিবিসি, আনাদোলু এজেন্সি।