শুক্রবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ইইউ থেকে এবার অস্ট্রিয়ার বেরোবার পালা?

ইইউ থেকে এবার অস্ট্রিয়ার বেরোবার পালা?

নতুন সংশয়ের মধ্যে পড়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। গত জুন মাসে ইইউ থেকে বের হওয়ার চূড়ান্ত আয়োজন শেষ করেছে ব্রিটেন। ইংলিশদের এই বেরিয়ে যাওয়াকে বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট। আর ব্রেক্সিটের ধাক্কা যে সুদূর প্রসারী হবে সেটি বিশেষজ্ঞরা আগেই মতামত দিয়েছেন। এর মধ্যে জার্মানির শীর্ষ অর্থনীতিবিদ হ্যান্স ওয়ার্নার সিন মন্তব্য করেছেন এবার ইইউ থেকে বের হয়ে যাওয়া উচিত সংস্থাটির অন্যতম প্রভাবশালী দেশ অস্ট্রিয়া। এই অর্থনীতিবিদ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে গেলে এতে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলো। অর্থাৎ গ্রিস ও স্পেনের মতো দরিদ্র দেশগুলো এতে সুবিধা পাবে, অন্যদিকে দুর্ভোগে পড়বে জার্মানি ও অস্ট্রিয়ার মতো দেশ। এ জন্য অস্ট্রিয়ার উচিত হবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া। যদি অস্ট্রিয়া ইইউ থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে তাকে বলা হবে অক্সিট। লন্ডনের অনলাইন এক্সপ্রেসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এসব কথা বলা হয়েছে। হ্যান্স ওয়ার্নার বলেছেন, ব্রিটেন ২০১৭ সালের শুরুতে যখন লিসবন চুক্তির ৫০ অনুচ্ছেদ সক্রিয় করবে তখন দরিদ্র দেশগুলোর করুণায় থাকবে তথাকথিত ধনী  দেশগুলো। এসব গরিব দেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ব্যবহার করবে তাদের স্বার্থে। তবে তিনি তার মতামতে অস্ট্রিয়াকে স্থায়ীভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে  বেরিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানাননি। তিনি বলেছেন, এ নিয়ে অস্ট্রিয়াকে নতুন করে সমঝোতার চেষ্টা করতে হবে। তিনি আরও আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, ব্রেক্সিট পরবর্তীতে মাসট্রিক্ট চুক্তি হয়ে পড়বে অপরিহার্য। ১৯৯২ সালে এ চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল জন মেজরের সরকার। আর অস্ট্রিয়া ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রবেশ করেছে মাত্র ১৯৯৫ সালে। অর্থাৎ ওই মাসট্রিক্ট চুক্তি স্বাক্ষরের তিন বছর পরে।

তাই তিনি ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে এই মাসট্রিক্ট চুক্তির প্রয়োজনীয়তার কথা জোর দিয়ে তুলে ধরেছেন। জার্মান এই অর্থনীতিবিদ মুদ্রা হিসেবে ইউরোরও সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এই মুদ্রা চালু করার ফলে বিভিন্ন দেশ অযৌক্তিকভাবে স্বল্প হারের সুদে অর্থ ধার নিয়েছে। এতে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উল্লেখ্য, হ্যান্স ওয়ার্নার ইন্সটিটিউট ফর ইকোনমিক-এর প্রেসিডেন্ট। তিনি যুক্তি দিয়ে বলেন, এই স্বল্প সুদের কারণে ইউরোর সত্যিকার মূল্যমান কমে গেছে। তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের ভিতরের অর্থনীতির বৈষম্যের বিষয়টিতেও দৃষ্টি দিয়েছেন। বলেছেন, অর্থনীতি ধসে পড়ার পরও কিভাবে পোল্যান্ডের চেয়ে গ্রিসে বেতন দ্বিগুণ হয়। তিনি বলেন, আমরা একটি নাটকীয় সময়ে বসবাস করছি। এখনো ইতালি ও গ্রিসের মতো দেশসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশে  বেকারত্বের সংখ্যা অনেক বেশি। ওদিকে এ বছরের শেষের দিকে অস্ট্রিয়াতে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে। সেই নির্বাচনে যদি দেশটির উগ্র ডানপন্থি দল ফ্রিডম পার্টি বিজয়ী হয় তাহলে তারা ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার প্রশ্নে গণভোট দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

সর্বশেষ খবর