মঙ্গলবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

ব্রিটিশ ব্র্যান্ড কারখানায় খাটছে শরণার্থী শিশুরা

ব্রিটিশ ব্র্যান্ড কারখানায় খাটছে শরণার্থী শিশুরা

তুরস্কে ব্রিটিশ ব্র্যান্ড শপগুলোর কারখানায় সিরীয় শরণার্থী শিশুদের দিয়ে পোশাক তৈরির কাজ করানো হচ্ছে। তুরস্কে যুক্তরাজ্যের ব্র্যান্ড শপ মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার, অনলাইন শপ আসুস, জারা, ম্যাঙ্গো জিনসের পোশাক তৈরির কারখানায় এসব শিশুকে কাজ করতে দেখা গেছে। বিবিসির এক গোপন তদন্তে এ তথ্য উঠে এসেছে। এ ঘটনার বিষয়ে অবশ্য ব্র্যান্ড শপগুলো দাবি করছে, খুব সতর্কতার সঙ্গে উৎপাদন-প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। শরণার্থী বা শিশুদের দিয়ে এ ধরনের কাজ করানো হলে তা মেনে নেওয়া হবে না। বিবিসি জানায়, তুরস্কে মার্কস অ্যান্ড স্পেনসার ও আসুস পোশাক তৈরির কারখানায় অন্তত সাতজন শরণার্থী শিশু কাজ করছে। যদিও মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারের দাবি, তাদের পরিদর্শনে কারখানায় কাজ করছে এমন একজন শিশুও তারা পায়নি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসব শিশুকে প্রচলিত মজুরির চেয়ে অনেক কম মজুরি দেওয়া হয়। ঘণ্টায় এক পাউন্ডের সামান্য বেশি মজুরি পায় তারা। বেশির ভাগ সময় এসব শিশুর মজুরি মধ্যস্থতাকারীকে দিয়ে হাতে হাতে পরিশোধ করা হয়। কোনো লিখিত চুক্তি নেই। শিশুদের একজন জানায়, তাদের সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করা হয়। সামান্য ভুলচুক হলে তাদের কাপড়ের মতো ছুড়ে ফেলা হয়। তাদের দিয়ে দিনে ১২ ঘণ্টার ওপরে কাজ করানো হয়। মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারের একজন মুখপাত্র বলেন, এমন কোনো ঘটনা ঘটলে তা হবে খুব গুরুতর ও অগ্রহণযোগ্য। মার্কস অ্যান্ড স্পেনসারে সব সময় বৈধ উপায়ে সিরীয় কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়। তদন্তে ইস্তাম্বুলে একটি কারখানায় সিরিয়ান শিশুদের কঠোর পরিশ্রম করতে দেখা গেছে। এই কারখানায় আসুস ব্র্যান্ডের পোশাকের কিছু নমুনা পাওয়া যায়। এ বিষয়ে জানতে চাইলে আসুস জানায়, ওই কারখানায় আসুসের পোশাক তৈরি হলেও এটি তাদের অনুমোদিত কারখানা নয়। পরে আসুসের পরিদর্শনেও ওই কারখানায় ১১ জন পূর্ণবয়স্ক সিরীয় শরণার্থী ও তিনজন শিশু কর্মী পাওয়া যায়। আসুস কর্তৃপক্ষ এই তিন শিশুকে আর্থিক সহায়তা এবং স্কুলে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তিদের বৈধ কোনো কাজ না পাওয়া পর্যন্ত তাদের পারিশ্রমিক দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে তারা। ইস্তাম্বুলে ব্র্যান্ড শপ ম্যাঙ্গো ও জারা জিনসের একটি কারখানায় সিরিয়ান শরণার্থীদের দিয়ে ১২ ঘণ্টা কাজ করানো হয় বলে তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। ম্যাঙ্গো বলছে, তুরস্কের এ কারখানা তাদের সাব-কন্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করে। তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। পরিদর্শনে তারা নিরাপত্তাজনিত কিছু ঘাটতি পেয়েছেন, কোনো শরণার্থী পাননি। ইস্তাম্বুলে ম্যাঙ্গো জিনসের আরেকটি কারখানায়ও সিরীয় শরণার্থীর পাশাপাশি তুরস্কের শিশুদের কর্মরত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে ১০ বছরের বয়সের কম বয়সী কর্মীও রয়েছে। বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, ব্র্যান্ড শপগুলো শিশুশ্রম প্রতিরোধে খুব বেশি কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

সর্বশেষ খবর