শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর, ২০১৬ ০০:০০ টা

৪৬ বছরে বন্যপ্রাণী কমেছে ৫৮ শতাংশ

৪৬ বছরে বন্যপ্রাণী কমেছে ৫৮ শতাংশ

দ্রুত কমছে বন্য প্রাণীর সংখ্যা। বিশ্বে ১৯৭০ সাল থেকে এ পর্যন্ত বন্য প্রাণীর সংখ্যা ৫৮ শতাংশ কমেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে ২০২০ সালের মধ্যে মেরুদণ্ডী প্রাণীর সংখ্যা দুই-তৃতীয়াংশ কমে যাবে। জুওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডন এবং ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ড লাইফ ফান্ডের (ডব্লিউডব্লিউএফ)  তৈরি প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, নদী, হ্রদ ও জলাভূমিতে থাকা প্রাণীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি কমেছে। মানুষের কর্মকাণ্ডের কারণে প্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস, দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনই প্রাণিকুলের সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ। ডব্লিউডব্লিউএফের বিজ্ঞান ও নীতিবিষয়ক বিভাগের প্রধান মাইক ব্যারেট বলেন, বন্য প্রাণীর সংখ্যা ব্যাপক হারে কমছে, এটা একেবারে স্পষ্ট। পরিস্থিতি এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে এটা চলতে দেওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘প্রাণীর সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণগুলো আমরা জানি। এটাও স্পষ্ট যে মানুষ প্রকৃতি বিনাশ করছে, আর এ কারণেই কমছে বন্য প্রাণীর সংখ্যা।’ ‘দ্য লিভিং প্ল্যানেট রিপোর্ট’ নামের এই প্রতিবেদনটি দুই বছর পর প্রকাশিত হয়।

 এখানে বন্য প্রাণীর অবস্থা তুলে ধরা হয়। প্রতিবেদন  তৈরি করতে বিভিন্ন পাখি, মাছ, স্তন্যপায়ী, উভচর এবং সরীসৃপজাতীয় ৩ হাজার ৭০০ প্রজাতির উপাত্ত সংগ্রহ করা হয়। বিশ্বের মোট মেরুদণ্ডী প্রাণীর মধ্যে এ সংখ্যা ৬ শতাংশ। এরপর গবেষকরা ১৯৭০ সালের পর থেকে কীভাবে এসব প্রাণীর সংখ্যা কমলো তা বিশ্লেষণ করেছেন। ২০১৪ সালে সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, বিগত ৪০ বছরে বিশ্বে বন্য প্রাণীর সংখ্যা অর্ধেক হয়ে গেছে। মাইক ব্যারেট বলেন, কিছু প্রাণীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে। এর মধ্যে সুস্বাদু পানিতে থাকা প্রাণীর সংখ্যা ১৯৭০ সালের পর  থেকে ৮১ শতাংশ কমে গেছে। সুপেয় পানি ব্যবহারের নানা অসঙ্গতিই এর কারণ। এর মধ্যে নদীতে বাঁধ দেওয়া একটা কারণ। প্রতিবেদনে আফ্রিকান হাতিসহ অন্যান্য প্রাণীর কমে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। নির্বিচার শিকারের জন্য এই হাতির সংখ্যা ব্যাপকহারে কমেছে সাম্প্র্রতিক সময়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিগত সময়ে প্রতিবছর গড়ে মেরুদণ্ডী প্রাণীর সংখ্যা কমেছে ২ শতাংশ হারে। এখনই যদি ব্যবস্থা না হয়, তবে এই দশকের শেষে প্রাণীর সংখ্যা ৬৭ শতাংশ কমে যাবে। জুওলজিক্যাল সোসাইটি অব লন্ডনের রবিন ফ্রিম্যান বলেন, প্রাণী নিধন, বন্য প্রাণীর ব্যবসা যদি চলতেই থাকে, তবে যে আশঙ্কা এখন করা হচ্ছে, প্রাণীর সংখ্যা তার চেয়ে বেশি কমে যাবে।

সর্বশেষ খবর