মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জয়কে কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছে না ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা। ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার এ আশঙ্কার কথা শেষ পর্যন্ত বলেই ফেলেছেন। লুক্সেমবার্গে শিক্ষার্থীদের সম্মেলনে এক ভাষণে জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, ট্রাম্প ইউরোপের প্রতি উদাসীন। তিনি নির্বাচিত হওয়ায় ইইউ’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ক হুমকির মুখে রয়েছে। ইইউ’র ওয়েবসাইটে এ কথা জানানো হয়। এদিকে ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার পর ইউরোপের নীতি নির্ধারক, রাজনীতিবিদ ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, উৎকণ্ঠা ও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জার্মানি থেকে প্রকাশিত ইউরোপের প্রভাবশালী পত্রিকা স্পিগেল অনলাইনের এক প্রতিবেদনে ইউরোপ-যুক্তরাষ্ট্রের জটিল সম্পর্কের চিত্র ফুটে উঠেছে। লেখাটিতে রাশিয়ার বর্তমান অবস্থান, সিরিয়ায় চলমান গৃহযুদ্ধ এবং তুরস্কের সাম্প্রতিক পরিস্থিতিকে বিবেচনায় রেখে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমার পুতিন ‘সমর্থিত’ ট্রাম্পের জয়ের মধ্য দিয়ে ইউরোপ ভবিষ্যতে কী পদক্ষেপ নিবে সেই বিষয়টি মুখ্য হয়ে উঠেছে। আবার ন্যাটো অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর একনায়কোচিত আচরণ এবং উদ্বাস্তু সমস্যাও ইউরোপের জন্য হুমকি বলে ওই লেখায় উল্লেখ করা হয়। তাছাড়াও ন্যাটোকে ইউরোপের আরও অর্থ দেওয়ার বিষয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য পূর্ব ইউরোপে ব্যাপক উদ্বেগের সূত্রপাত ঘটিয়েছে।এদিকে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের ফরেন অ্যাফেয়ার্সের চেয়ারম্যান এলমার ব্রক বলেন, ইউরোপের কাছে প্রথম দিকে জোসেফ স্তালিন আতঙ্কের ব্যাপার ছিল। এ বিবেচনায় ট্রাম্প দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন। তবে ট্রাম্পকে গণখুনী হিসেবে চিহ্নিত স্তালিনের সঙ্গে তুলনা করা হয়নি। ভয় ঐক্যকে নেতৃত্ব দিতে পারে। এক্ষেত্রে ভয়ের ব্যাপার হলো, যুক্তরাষ্ট্র যেখানে ছিল সেখানে থাকবে না। অন্যদিকে ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট জ্যঁ ক্লদ জাঙ্কার বলেন, আমাদেও যে বিষয়ে দৃষ্টি ছিল তা এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র কখনো আজীবন ইউরোপের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখবে না। এটি আমাদের নিজেদেরই করতে হবে।
নেটো প্রধানের হুঁশিয়ারি : যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়ে নেটো মহাসচিব ইয়েন্স স্টলটেনবার্গ বলেছেন, ‘একলা চল নীতি’ ইউরোপ বা যুক্তরাষ্ট্র কারও জন্যই মঙ্গলের পথ হবে না। ব্রিটিশ দৈনিক অবজারভার এর লেখা এক কলামে স্টলটেনবার্গ এ কথা বলেন। নির্বাচনী প্রচারের সময় পশ্চিমা সামরিক জোট নেটোকে অচল বলে মন্তব্য করেছিলেন ট্রাম্প। নরওয়ের সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্টলটেনবার্গ লেখেন, ‘আমরা নিশ্চিন্তে যে স্বাধীনতা, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধি উপভোগ করছি তার সবকিছুই তুলে নেওয়া খুব সহজ। বর্তমান অনিশ্চিত সময়ে আমাদের দৃঢ় মার্কিন নেতৃত্বের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে দায়িত্বের ন্যায্য ভাগও ইউরোপের দেশগুলোকে কাঁধে তুলে নিতে হবে।’ এএফপি, বিবিসি।