বৃহস্পতিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা

কোণঠাসা আইএস আরও নৃশংস হয়ে উঠেছে

কোণঠাসা আইএস আরও নৃশংস হয়ে উঠেছে

আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএসের মূল ঘাঁটি মসুল নিয়ন্ত্রণের জন্য সাঁড়াশি অভিযান শুরু করেছে ইরাকি সেনাবাহিনী। এই অভিযানে ইরাকি বাহিনীকে সহায়তা করছে কুর্দি পেশমেরগা ও মার্কিন বিমানবাহিনী। ২০১৪ সালে মসুল দখল করে খেলাফতের ঘোষণা দিয়েছিলেন আইএস প্রধান আবু-বকর আল বাগদাদি। তারপর  থেকে প্রায় দুই বছর সেই শহরে আইএসের রাজত্ব চলেছে। কিন্তু ইরাক সরকারের এই বিশাল অভিযানে কোণঠাসা হয়ে পড়েছে আইএস। কিন্তু তারপরেও নৃশংসতা থেকে একটুও পিছু হটছে না এই জঙ্গিরা। তারা সেখানে হাজার হাজার সাধারণ মানুষকে জিম্মি করছে। আর জিম্মি করা লোকজনদের মধ্যে যদি কারও কাছে মোবাইল ফোন পান তা হলে তার রক্ষে নেই।  শুধু মোবাইল নয় এর সিম পেলেও রক্ষা নেই। হয় ফায়ারিং স্কোয়াড। নয়তো খাঁচায় আটকে পানিতে ঢুবিয়ে হত্যা। ভাগ্য আরও মন্দ থাকলে শিরশ্ছেদ। ঘেরাও হয়ে থাকা ইরাকি শহর মসুলের সাধারণ নাগরিকদের এটাই বাস্তব। এভাবে শুধু বেঁচে থাকাটাই  যেখানে ক্রমেই কঠিন হয়ে উঠছে।

মসুলের উত্তর, দক্ষিণ আর পূর্ব প্রান্ত ইতিমধ্যেই ঘিরে  রেখেছে ইরাকের সরকারি সেনা ও কুর্দি পেশমেরগা বাহিনী। এবার পশ্চিম মসুলের দিক থেকেও জঙ্গিদের  কোণঠাসা করতে চাইছে ইরান সমর্থিত শিয়া মিলিশিয়ারা। এই পথে এখনো সিরিয়া থেকে অস্ত্র ও নিত্যপ্রয়োজনীয় রসদ আসে। সেখানে আঘাত হানা শুরু হয়ে গেছে। এখন রাস্তাজুড়ে জ্বলন্ত ট্রাকের সারি।

এটা জানাই ছিল মসুল দখলের লড়াই সহজ হবে না। বাস্তবে তাই ঘটেছে। ইরাকি বাহিনীর ওপর চোরাগোপ্তা হামলা শুরু করেছে। তবে এই অভিযানের বড় সমস্যা হলো মসুলের সাধারণ নাগরিকরা। প্রায় ১০ লাখ লোকের বাস এ শহরে। শঙ্কা ছিল এই নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করবে আইএস। হচ্ছেও তাই। তারপরেও সাঁড়াশি আক্রমণের সামনে পড়ে ক্রমেই দিশাহারা হয়ে পড়ছে আইএস। দিশাহারা হয়ে পড়ছে বাগদাদিও। প্রতি দিন অবস্থান পাল্টে ফেলছেন। এক রাস্তা দিয়ে দুবার যাচ্ছেন না। একই জায়গায় পর পর একাধিক রাত কাটাচ্ছেন না। যত সম্ভব মসুলেও আর থাকছেন না বাগদাদি। সিরিয়ার সীমানা ঘেঁষা নিনেভ প্রদেশের বাজ-এ থাকছেন। সাদ্দামের পতনের পর  থেকে বাজ জুড়ে ভূগর্ভস্থ টানেল তৈরি করা হয়েছিল।  সেগুলোই কাজে লাগাচ্ছে আইএস। কিন্তু এভাবে অবস্থান বদল করায় জঙ্গিদের কাছে ঠিকমতো নির্দেশ  পৌঁছাচ্ছে না। বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। ফলে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে আইএস। এখন আইএসের মূল অস্ত্র তাদের প্রায় ২০ হাজার আত্মঘাতী জঙ্গি। তারা সেনার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। এখানেই শেষ নয়, ইরাকি বাহিনীর আশঙ্কা মসুলের পতনের পরে আইএস  গেরিলা যুদ্ধের পদ্ধতি নেবে। ইরাক জুড়ে চোরাগোপ্তা হামলা শুরু হবে। সে ক্ষেত্রে এই আত্মঘাতী বাহিনী কাজে লাগবে। এএফপি

সর্বশেষ খবর