রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০১৬ ০০:০০ টা
জাতিসংঘের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান

বসতি স্থাপন বন্ধ না করার ঘোষণা ইসরায়েলের

বসতি স্থাপন বন্ধ না করার ঘোষণা ইসরায়েলের

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন বন্ধের পক্ষে নিরাপত্তা পরিষদে পাস হওয়া প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইসরায়েল। এই প্রস্তাবের নিন্দা জানানোর পাশাপাশি তারা জানিয়েছে, প্রস্তাবের কোনো শর্ত মানতে বাধ্য নয় ইসরায়েল।

গণমাধ্যম সূত্রে বলা হয়, শুক্রবার ১৫ সদস্যবিশিষ্ট জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবটি তুলে ধরা হয়। ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের বিরুদ্ধে ওই প্রস্তাবে বলা হয়, ‘১৯৬৭ সাল থেকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েল যে বসতি স্থাপন করে যাচ্ছে, তার কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’ ভোট দান থেকে বিরত থাকে যুক্তরাষ্ট্র। বাকি ১৪টি দেশ এই প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিলে তা পাস হয়। প্রস্তাবটিকে আন্তর্জাতিক আইনের বিজয় এবং ইসরায়েলি চরমপন্থার প্রত্যাখ্যান বলে উল্লেখ করেছে ফিলিস্তিন। আর ইসরায়েল বলছে, তারা এর তোয়াক্কা করে না। প্রস্তাবের কোনো শর্তই মানবে না তারা। এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, ‘এমন এক অদ্ভুত প্রস্তাব যেন কোনো খারাপ প্রতিক্রিয়া না ফেলতে পারে, এ লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের হবু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত ইসরায়েল।’ তিনি আরও বলেন, ‘জাতিসংঘে পাস হওয়া ওই লজ্জাজনক ইসরায়েলবিরোধী প্রস্তাব ইসরায়েল প্রত্যাখ্যান করে। ইসরায়েল তা মানতে দায়বদ্ধ নয়। ইসরায়েলকে রক্ষার জন্য জাতিসংঘে গড়ে ওঠা দলবাজি রুখতে ব্যর্থ হয়েছে ওবামা প্রশাসন। দৃশ্যপটের বাইরেই কেবল তারা সংঘাতে জড়ায়।’ সিরিয়া গৃহযুদ্ধের প্রসঙ্গ টেনে নেতানিয়াহু বলেন, ‘একই সময়ে যখন সিরিয়ায় পাঁচ লাখ মানুষের হত্যা রুখতে নিরাপত্তা পরিষদ কিছুই করেনি, তখন মধ্যপ্রাচ্যে সত্যিকারের গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে তারা লজ্জাজনক দলবাজি করছে।’ জাতিসংঘে ইসরায়েলি দূত ড্যানি ড্যানন আল-জাজিরাকে বলেন, তাদের সরকার আশা করেছিল যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবে ভেটো দেবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন মার্কিন প্রশাসন এবং জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব এসে নতুন কিছু করবে। এর আগে বুধবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মিসর একটি খসড়া প্রস্তাব উত্থাপন করে। তাতে দাবি জানানো হয়, পূর্ব জেরুজালেমসহ অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বসতি নির্মাণ জরুরি ভিত্তিতে ও পূর্ণাঙ্গভাবে বন্ধ করতে হবে। মিসরের ওই প্রস্তাবেও একইভাবে বলা হয়েছিল, ‘ইসরায়েলের ওইসব বসতির কোনো বৈধতা নেই। আর তা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’ নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় জাতিসংঘে এ নিয়ে ভোটাভুটির কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের কয়েক ঘণ্টা আগে হঠাৎ মিসর প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ভোটাভুটি স্থগিত করা হয়। পরে নিউজিল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ভেনেজুয়েলা, সেনেগালের পক্ষ থেকে একই প্রস্তাব তুলে ধরা হলে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ঐতিহাসিক’ নীরবতায় তা পাস হয়।  প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনিরা চায় পশ্চিমতীরে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে এবং পূর্ব জেরুজালেমকে এর রাজধানী বানাতে। ১৯৬৭ সালের আরব যুদ্ধের পর থেকে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করে রেখেছে। বিবিসি, আল-জাজিরা।

সর্বশেষ খবর