শুক্রবার, ১৩ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাবে ব্রেসলেট

সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাবে ব্রেসলেট

দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ছে সন্ত্রাসী হামলা। বাদ যাচ্ছে না নিরাপত্তায় সুগঠিত জার্মানির মতো দেশ। এর মধ্যে কয়েকটি সন্ত্রাসী হামলাও হয়েছে দেশটিতে। এরপর কী করে এ ধরনের সহিংস কর্মকাণ্ড ঠেকানো যাবে তা নিয়ে নানা চিন্তাভাবনা করে যাচ্ছে জার্মানি। সর্বশেষ গত মাসে বার্লিনে ট্রাক হামলার ঘটনায় এক অভিবাসন প্রত্যাশীকে সন্দেহ করার পর জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থমাস দে মাইজেয়েরে এবং বিচারবিষয়কমন্ত্রী হেইকো মাস অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে কড়াকড়ি আরোপের ব্যাপারে একমত হন। অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে যেসব কড়াকড়ি আরোপের কথা তারা ভেবেছেন তার মধ্যে একটি হলো অ্যাংকেল ইলেক্ট্র্রনিক ব্রেসলেটের ব্যবহার। অর্থাৎ যে সব অভিবাসন প্রত্যাশীকে নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করা হবে তাদের পায়ের গোড়ালিতে এ ব্রেসলেট ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। তবে সন্ত্রাসী হামলা প্রতিহত করতে বিশেষ ব্রেসলেট ব্যবহার নিয়ে এরই মধ্যে জার্মান রাজনীতিবিদ ও সাংবাদিকরা বিতর্কে মেতেছেন। গোড়ালিতে পরিধানযোগ্য এসব ব্রেসলেট আদৌ কার্যকর হবে কিনা তা নিয়ে চলছে বিতর্ক। যে ব্রেসলেট নিয়ে বিতর্ক চলছে সেটির কার্যকারিতা আসলে  কেমন, এটি কী করতে পারে কিংবা কী করতে পারে না তা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে।

অ্যাংকেল ব্রেসলেট কী? : অ্যাংকেল ইলেক্ট্রনিক ব্রেসলেট হলো এক ধরনের ‘অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা’ বা ‘যন্ত্র’। স্পোর্টস ঘড়ির চেয়ে সামান্য বড় এ ব্রেসলেটটি পানিরোধক। যেসব সন্দেহভাজনের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে কিংবা যারা সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করছে তাদেরকে কাজে পাঠানোর সময় ওই ব্রেসলেট লাগিয়ে দেওয়া হলে তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা যায়। তবে ডয়চে ভেলে জানায়, ওই ব্রেসলেট দিয়ে সহিংস অপরাধীদের অপরাধ সংঘটন থেকে বিরত করা যায় না। এক জোড়া শক্ত কাঁচি দিয়েই সহজে তা খুলে ফেলা যায়।  কেউ যদি আত্মঘাতী হামলার পরিকল্পনা করে তবে অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা দিয়ে তাকে আটকানো যাবে। এটিকে স্থায়ীভাবে লাগানো যায় কি না তা নিয়েও চিন্তাভাবনা চলছে।

জার্মানিতে মনিটরিংয়ের মাত্রা : অপরাধী শনাক্তকরণ ব্যবস্থা প্রথম চালু হয় যুক্তরাষ্ট্রে। পাঁচ বছর আগে যৌথভাবে এ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সম্মত হয় জার্মানির কয়েকটি রাজ্য। মনিটরিং ডিভাইসে সংগ্রহ করা যেটা একটি কেন্দ্রীয় কম্পিউটারে এসে জড়ো হয়। এ পর্যন্ত এ ব্যবস্থার প্রোগ্রাম এমনভাবে করা আছে যেন কাজের জন্য কিংবা ভালো আচরণের জন্য মুক্তি পাওয়া অপরাধী কিংবা বিচারের অপেক্ষায় থাকা সন্দেহভাজনদের জন্য এর প্রোগ্রাম করা হয়েছে।

ব্রেসলেটটির সতর্কতা সংকেত : সত্যিকারের অ্যাংকেল  ব্রেসলেট বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেইসব অপরাধীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়, যাদের জন্য নির্দিষ্ট এলাকায় প্রবেশ ও  বের হওয়া নিষিদ্ধ। যেমন এটা ব্যবহার হতে পারে কোনো গৃহবন্দীর ক্ষেত্রে কিংবা কোনো সহিংস স্বামী যেন তার স্ত্রীর বাড়ি কিংবা অফিসে গিয়ে উত্ত্যক্ত না করতে পারেন। যে বাড়িতে অপরাধীকে মনিটর করা হবে সেখানে কর্তৃপক্ষ একটি রিসিভার ইনস্টল করেন। ওই রিসিভারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব পর্যন্ত ব্রেসলেটটি থেকে সংকেত শনাক্ত করা হয়। অপরাধীর বসবাসের শহরকে কিংবা অঞ্চলকে পুরোপুরিভাবে মনিটরিংয়ের আওতায় নিয়ে আসা যায়। ওই  লোকটি কোথায় আছেন তা জিপিএস সিস্টেম শনাক্ত করে। এরপর সে ব্যক্তির গতিবিধিসহ বিভিন্ন তথ্য কেন্দ্রীয় সার্ভারে পাঠানো হয়। ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, জার্মানির  বেশ কয়েকটি রাজ্য ইলেক্ট্রনিক ট্যাগ পরিহিত অভিযুক্ত অপরাধীদের মনিটরে একসঙ্গে কাজ করার ব্যাপারে অঙ্গীকার করেছে। তবে, অপরাধীদের ওপর নজর রাখার যে ব্যবস্থা তা গতানুগতিক ধারার অজ্ঝাংকেল ব্রেসলেটকে ছাড়িয়ে  গেছে। 

সর্বশেষ খবর