শুক্রবার, ২০ জানুয়ারি, ২০১৭ ০০:০০ টা

ট্রাম্প কি একক সিদ্ধান্তে পারমানবিক বোমা হামলা চালাতে পারবেন?

বিবিসির বিশ্লেষণ

ট্রাম্প কি একক সিদ্ধান্তে পারমানবিক বোমা হামলা চালাতে পারবেন?

আজ বাংলাদেশ সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যখন শপথ নেবেন তখন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার পাশে অজ্ঞাতনামা, অপরিচিত একজন সামরিক কর্মকর্তাকে দেখা যাবে। ওই সামরিক কর্মকর্তার হাতে অথবা কাঁধে ঝোলানো থাকবে একটি ব্রিফকেস, নিউক্লিয়ার ফুটবল নামে যেটি পরিচিত। ব্যাগের ভিতরে থাকবে বিস্কিট নামে পরিচিত ছোট একটি যন্ত্র। ৫ ইঞ্চি দৈর্ঘ্য এবং ৩ ইঞ্চি প্রস্থের সেই যন্ত্রের ভিতরেই থাকবে কৌশলগত পারমাণবিক হামলা চালানোর লঞ্চ (নিক্ষেপ) কোড। কীভাবে সেই যন্ত্র ব্যবহার করতে হয় সেটি এরই মধ্যে লোকচক্ষুর অন্তরালে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে শেখানো হয়েছে। যখনই তার শপথ নেওয়া শেষ হবে, তখনই সন্তর্পণে ওই সামরিক কর্মকর্তা ব্যাগ হাতে সরে আসবেন ট্রাম্পের দিকে। এরপরই ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে চলে যাবে এমন একটি সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা যার ফলে এক ঘণ্টার মধ্যেই লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটতে পারে। পরমাণু বোমা নিয়ে ট্রাম্পের কৌতূহল অনেক বেশি। নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি এমনও বলেছিলেন, হাতে পারমাণবিক বোমা থাকতে কেন শত্রুরা মাথা চাড়া দেবে? নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি এক টুইট বার্তায় বলেছিলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের পারমাণবিক সামর্থ্য ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত না বিশ্ব পারমাণবিক বোমা নিয়ে স্বজ্ঞানে ফিরছে।’ ঠিক এ কারণেই এখন অনেকের মাথায় প্রশ্ন ঘুরছে—এমন পাতলা চামড়া এবং আবেগতাড়িত মেজাজের একজন মানুষের হাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকার পর সেই ভয়ঙ্কর পরিণাম ঠেকাতে আর কী কী রক্ষাকবচ থাকবে বা আদৌ থাকবে কিনা? তবে মার্কিন-নীতি অনুযায়ী পারমাণবিক হামলার চেইন অব কমান্ডে অন্য সিনিয়র কর্মকর্তারাও যুক্ত থাকবেন, যেমন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল জেমস ম্যাটিস। তবে ওয়াশিংটনের ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের পারমাণবিক অস্ত্রের বিস্তারবিষয়ক বিশেষজ্ঞ মার্ক ফিজপ্যাট্রিক বলছেন, হামলা চালানোর চূড়ান্ত কর্তৃত্ব শুধু প্রেসিডেন্টের ওপরই বর্তাবে।

পারমাণবিক হামলা চালানোর ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্টের কর্তৃত্ব নিয়ে কোনো চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, তবে তিনি নির্দেশ দেওয়া থেকে বোমা নিক্ষেপের আগ পর্যন্ত আরও কিছু মানুষ এ প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবেন। কোনো প্রেসিডেন্ট একা এ ধরনের বিশেষ সিদ্ধান্ত নেবেন—এমনটা অবাস্তব। তিনি নির্দেশ দেবেন এবং সাংবিধানিকভাবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা মন্ত্রী নির্দেশ পালনের ব্যবস্থা নেবেন। তবে তাত্ত্বিকভাবে বললে, প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর যদি প্রেসিডেন্টের মানসিক সুস্থতা নিয়ে কোনো সন্দেহ থাকে—তিনি নির্দেশ পালনে অস্বীকৃতি জানাতে পারেন।

সর্বশেষ খবর