শনিবার, ৪ মার্চ, ২০১৭ ০০:০০ টা

সেশনসের পক্ষে ট্রাম্পের সাফাই

সেশনসের পক্ষে ট্রাম্পের সাফাই

জেফ সেশনস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসের বিরুদ্ধে আনা রাশিয়া প্রীতির অভিযোগকে পাত্তাই দিচ্ছেন না। বরং পদত্যাগের চাপের মুখে থাকা অ্যাটর্নি জেনারেলের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, ‘জেফ একজন সৎ মানুষ।’ রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসরায়েকের সঙ্গে দুবার গোপন বৈঠক করেছেন জেফ। এরপরই সমালোচনার ঝড় ওঠে। সমালোচনার মুখে মার্কিন নির্বাচনের রাশিয়া হস্তক্ষেপ বিষয়ক এক তদন্ত কমিটি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। আর ডেমোক্রেটরা তার পদত্যাগের দাবিতে অটল রয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেন, ‘সেশনস হয়ত আরও স্পষ্ট করে বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে পারতেন। কিন্তু তিনি কোনো অভিসন্ধি নিয়ে এটি করেননি।’ ডেমোক্রেটদের বিরুদ্ধে অযথাই ত্রুটি খুঁজে বেড়ানোর অভিযোগও করেন তিনি। ডেমোক্রেটরা বলছেন, জেফ সেশনস সিনেট কনফারমেশন হেয়ারিংয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার যোগাযোগ সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে শপথ নিয়েছেন। সে কারণে তার পদত্যাগ করা উচিত। তোপের মুখে সেশনস এরই মধ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের অভিযোগ নিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের একটি তদন্ত থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ডেমোক্রেটদের অভিযোগ, গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের সময় রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে  সেশনস যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা বিশ্বাসযোগ্য নয়। ফলে সেশনসের পদত্যাগ দাবি করেছেন মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্রেটিক নেতা ন্যান্সি  পেলোসি। মার্কিন বিচার বিভাগের তথ্যের ভিত্তিতে ওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা বলছে, অ্যাটর্নি জেনারেল সেশনস গত বছর দুইবার রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসরায়েকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন। তবে এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন  সেশন। বুধবার তিনি আবারও দাবি করেন, তিনি কখনোই নির্বাচন নিয়ে রাশিয়ার কারও সঙ্গে আলোচনা করেননি। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।

ট্রাম্পের নতুন ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ পিছিয়েছে : মাস দেড়েক আগে ক্ষমতায় এসেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ সাত দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে নির্বাহী আদেশ জারি করেন। এ নিয়ে গোটা বিশ্বে তোলপাড় শুরু হয়। কিন্তু তার এ আদেশ থামিয়ে দেয় দেশটির আদালত। ওই নির্বাহী আদেশ সংবিধানবিরোধী বলে ফেডারেল আদালত তা শেষ পর্যন্ত বাতিল করে দেয়। কিন্তু সেখানেই থেমে থাকেননি ট্রাম্প। তিনি আবার ঘোষণা দেন, এবার আটঘাট বেঁধে নতুন আইন তৈরি করবেন, যাতে মুসলিম ওইসব দেশের নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না পারেন এবং যারা অবৈধভাবে আছে তাদের বাতিল করে দেবেন। তবে বার্তা সংস্থা এপি গতকাল জানায়, এবার আর আগের মতো ওই তাগাদা বোধ করছেন না প্রেসিডেন্ট ট্রাম ও তার প্রশাসন। খবরে বলা হয়, নতুন করে নির্বাহী আদেশ জারি করার সময়সীমা বার বার পেছানো হচ্ছে। হয়তো আইনি জটিলতা টের পেয়েই এমনটা করা হচ্ছে। ফলে ট্রাম্প প্রশাসন নিজেদের অগ্রাধিকার ও পলিসিতে পরিবর্তন আনতে বাধ্য হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা বলেন, আগামী সপ্তাহের আগে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি হওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই। এমনকি এর পরেও বিলম্ব হতে পারে। অথচ গেল সপ্তাহে তা প্রকাশ করার কথা ছিল। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের আমলে অভিবাসন সেবা বিভাগের প্রধান ডরিস মেসনার বলেন, ‘আগে চটজলদি ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে তারা যে ব্যাখ্যা দিয়েছিল, তার সঙ্গে এখনকার বিলম্ব তো সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।’ তার মতে, ওই যুক্তি ছিল কল্পিত! আর অমন তড়িঘড়ি নির্বাহী আদেশ সই করার বিষয়টি মূলত প্রশাসনের অনভিজ্ঞতাই ফুটিয়ে তোলে। বিবিসি।

সর্বশেষ খবর