বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিরিয়ায় গ্যাস হামলা নিয়ে রাশিয়া-পশ্চিমা বিরোধ

সিরিয়ায় গ্যাস হামলা নিয়ে রাশিয়া-পশ্চিমা বিরোধ

সিরিয়ার ইদলিবে বিষাক্ত গ্যাস হামলায় নিহত শিশুকে দাফনের প্রস্তুতি স্বজনদের —এএফপি

সিরিয়ার ইদলিব প্রদেশটি মূলত বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত। সেখানের খান শেইখুন শহরে মঙ্গলবার বিষাক্ত গ্যাসের বিস্ফোরণ এবং তাতে ৭২ জনের মৃত্যু নিয়ে তুমুল হৈচৈ শুরু হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো বাশার আল আসাদের সরকারকে দায়ী করছে এবং বলছে চরম যুদ্ধাপরাধ হয়েছে। কিন্তু রুশ সরকার গতকাল বলেছে, বিষাক্ত গ্যাসভর্তি ওই অস্ত্র বিদ্রোহীরা তৈরি করছিল। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, বিষাক্ত গ্যাসভর্তি মাইন প্রস্তুত করা হয় এমন একটি ডিপোতে সিরিয়ার যুদ্ধবিমান হামলা চালালে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। ইউটিউবে প্রচারিত এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনোশেনকভ বলেন, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ১২টার মধ্যে খান শেইখুনের শহরতলিতে সন্ত্রাসীদের একটি অস্ত্র ডিপোতে সিরীয় বিমান হামলা চালায়। ওই ডিপোতে রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি হতো। রুশ ওই মুখপাত্র বলেন, একই ধরনের রাসায়নিক অস্ত্র বিদ্রোহীরা গত বছর আলেপ্পোতে ব্যবহার করেছে। কিন্তু রাশিয়ার এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা কয়েকটি দেশ রাসায়নিক হামলার জন্য সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সশস্ত্র বাহিনীকেই দায়ী করেছে। তারা বলছে, সিরিয়ার বিমান থেকেই সারিন গ্যাস হামলা চালানো হয়েছে।

ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, একজন বিদ্রোহী কমান্ডার এমনকি একজন অস্ত্র বিশেষজ্ঞও বলেছেন, তথ্যপ্রমাণ থেকে এ আলামতই পাওয়া যাচ্ছে যে, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা বলেছেন, খান শেইখুন শহরের মধ্যে সামরিক কোনো স্থাপনা নেই, তবে যেখানে এই বিস্ফোরণ হয়েছে সেই এলাকা বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।

যা ঘটেছে : মঙ্গলবারের রাসায়নিক হামলার পর খান শেইখুন শহরের ফুটেজে অনেক শিশুসহ আরও মানুষের দম বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মুখ দিয়ে ফেনা উঠতে দেখা গেছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক নারী গ্যাস আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি যেসব উপসর্গের কথা বলেছেন সেগুলো রাসায়নিক হামলার শিকার হওয়ারই ইঙ্গিত দেয়। ওই নারী বলেন, ‘আমাদের ওপর গ্যাস হামলা চালানো হয়েছে। আমরা দাঁড়াতে পারছিলাম না।

পশ্চিমা ও অন্যদের প্রতিক্রিয়া : রাশিয়ার বিবৃতির পর যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, ‘আমি যেসব প্রমাণ দেখেছি সেগুলো সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের তার নিজের জনগণের প্রতি অবৈধ অস্ত্র ব্যবহারের ইঙ্গিত দিচ্ছে।’ সিরীয় বিদ্রোহী দল ফ্রি ইদলিব আর্মি রিবেল গ্রুপের কমান্ডার হাসান হাজ আলি রাশিয়ার বিবৃতিকে ‘মিথ্যা’ বলে বর্ণনা করেছেন। রাসায়নিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ কর্নেল হামিশ দে ব্রেটন-গরডন বিবিসিকে বলেন, রাসায়নিক হামলা নিয়ে রাশিয়ার ব্যাখ্যা ‘খুবই কল্পনাপ্রসূত’। এএফপি, বিবিসি

সর্বশেষ খবর