মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকৃতি ও পরিবেশবিরোধী জ্বালানি নীতির বিরুদ্ধে একজোট হতে শুরু করেছে তার দেশের মানুষজন। ওই নীতির বিরুদ্ধে ১৭ অঙ্গরাজ্যের আইনি চ্যালেঞ্জে পড়েছেন ট্রাম্প। বুধবার তারা মার্কিন আদালতে ট্রাম্পের জ্বালানি নীতিকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। ওই সব অঙ্গরাজ্যের ওই জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে নিউইয়র্ক। কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমিয়ে পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধি ঠেকিয়ে রাখাটা মার্কিন প্রশাসনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে বলে মনে করে তারা। সে কারণেই তারা ট্রাম্পের জ্বালানি নীতিকে আইনি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন।
সম্প্রতি কার্বন নিঃসরণের কারণে বেড়ে যাওয়া বৈশ্বিক উষ্ণতাকে সীমিত রাখতে ‘ক্লিন পাওয়ার প্ল্যান’ নামে নেওয়া ওবামা প্রশাসনের পরিকল্পনা বাতিল করে ‘এনার্জি ইন্ডিপেন্ডেন্স এক্সিকিউটিভ অর্ডার’ নামে নতুন নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প। মার্কিন পরিবেশ সুরক্ষা বিষয়ক দফতর ইপিএ-তে স্বাক্ষরিত ওই নির্বাহী আদেশে ফেডারেল জমিতে কয়লা ইজারার ওপর বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়। তেল ও গ্যাস উৎপাদন থেকে মিথেনের নিঃসরণ কমাতে ওবামা যে বিধিনিষেধ জারি করেছিলেন, সেগুলো উঠে যায়।
তবে পরিবেশগত বিষয় অস্বীকার করাকে বেআইনি মনে করছে ১৭টি অঙ্গরাজ্য। নিউইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল এরিক স্নাইডারম্যানের মতে মার্কিন ‘আইন খুব পরিষ্কার। তা মার্কিন পরিবেশ সুরক্ষা অধিদফতরকে অবশ্যই জ্বালানি খাতের কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে।’ অবশ্য কার্বন নিঃসরণ কমাতে ওবামার দেওয়া নির্বাহী আদেশটি কার্যকর হয়নি কখনো। ২৬টি রিপাবলিকান প্রভাবিত অঙ্গরাজ্যের বিরোধিতার মুখে পড়েছিল সেই নীতি। এবার ট্রাম্প ক্ষমতায় এসে তা পর্যালোচনা করে সংযোজন, বিয়োজন কিংবা বাতিল করার পদক্ষেপ নিতে মার্কিন জাতীয় পরিবেশ সুরক্ষা দফতরকে আদেশ দেন। নির্বাচনের আগে থেকেই ট্রাম্পকে জলবায়ু চুক্তিবিরোধী অবস্থানে দেখা গেছে। গত নভেম্বরে এক সূত্রকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছিল প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে অঙ্গীকারবদ্ধ ট্রাম্প বিভিন্ন উপায় খুঁজছেন। চুক্তি থেকে বের হয়ে আসতে চার বছরের একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। তবে চুক্তিটি সমঝোতামূলক হওয়াতে কেউ এটি না মানলে কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই।ট্রাম্পের সমালোচনায় আইএস: জঙ্গি সংগঠন আইএস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমালোচনা করে বলেছে, আমেরিকা চালাচ্ছে একজন ‘আহাম্মক’। এই প্রথম ট্রাম্পের প্রতি ইঙ্গিত করে বক্তব্য দিল আইএস। মুসলমানদের ভাবমর্যাদা নষ্ট করতে আমেরিকা ও তার মিত্র দেশগুলোই এই সংগঠন সৃষ্টি করেছে বলে বিশ্লেষকরা দাবি করে আসছেন। কিন্তু এবার হঠাৎ কেন ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইএস কথা বলল তা স্পষ্ট নয়। সংগঠনটির মুখপাত্র আবি আল-হাসান আল-মুহাজের বলেছেন, সিরিয়া, ইরাক বা ইসলাম সম্পর্কে জানে না ট্রাম্প এবং একজন আহাম্মক যে আমেরিকা পরিচালনা করছে সে ব্যাপারে কোনো প্রমাণ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পাশাপাশি সারা বিশ্বে মার্কিনিদের ওপর হামলা করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠনটি। আর এ বিবৃতির মাধ্যমে ট্রাম্প বিষয়ে দীর্ঘ নীরবতা ভেঙেছে আইএস। তবে এটাকে লোক দেখানো বিবৃতি হিসেবে মনে করেন অনেকেই। গার্ডিয়ান