শনিবার, ৮ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

সিরিয়ায় ‘মুখোমুখি’ সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

সিরিয়ায় ‘মুখোমুখি’ সংঘাতে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

পুতিন, ট্রাম্প

রাশিয়া আর আমেরিকার সম্পর্ক সব সময়ে বৈরী। তবে ট্রাম্প এসে সেই ধারণা বদলে দিতে চেয়েছেন। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্প গলায় গলায় ভাবেরও ইঙ্গিত দেন। নিজের নির্বাচনী প্রচার চলাকালীন মুক্তকণ্ঠে পুতিনের প্রশংসা করেছেন। এমনকি তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার থেকে পুতিনকে এগিয়ে রেখেছিলেন তিনি। শুধু কী তাই, অভিযোগ আছে পুতিনের  গোপন নির্দেশে এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ট্রাম্পের অনুকূলে প্রভাবিত করতে উদ্যোগী হয়েছিল রাশিয়ার গোয়েন্দারা। তবে সবকিছুই পাল্টে গেল গতকাল। যখন সিরিয়ার বিমান ঘাঁটিতে একে একে আঘাত হেনেছে ৫৯টি টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র। সরাসরি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাসার আল আসাদের বিরুদ্ধে আক্রমণ করারও আদেশ দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আর এতেই দুই নেতার হঠাৎ করেই বন্ধুত্বে যেন ফাটল ধরিয়ে দিয়েছে।

স্বভাবতই রাশিয়া এ হামলার নিন্দা করেছে। যদিও এ হামলার আগে রাশিয়ার সেনাকে জানিয়েছিল আমেরিকা। মার্কিন এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর রাশিয়া এর বিরুদ্ধে ক্রুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। রাশিয়া বলেছে, এ হামলার পর সিরিয়ার বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা হবে। প্রেসিডেন্ট পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভের ভাষায়, রুশ-মার্কিন সম্পর্কে মারাত্মক আঘাত হেনেছে ওয়াশিংটন। অন্যদিকে, রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এ হামলাকে ইরাক যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এরকম হামলার কোনো যৌক্তিকতা তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। তিনি বলেন, এটি কল্পিত অজুহাতে সার্বভৌম একটি দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসন ছাড়া আর কিছু নয়। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং তাদের মিত্ররা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন ছাড়া যেভাবে ইরাকে আগ্রাসন চালিয়েছিল, তার সঙ্গে এবারের ঘটনার সবকিছুই মিলে যায়। এটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে তিনি উল্লেখ করেন। রাশিয়ার প্রতিক্রিয়ায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় দাবি করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র তার জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থেই এ ব্যবস্থা নিয়েছে। তবে এই মার্কিন হামলার ব্যাপারে বিশ্বব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ব্রিটেন, তুরস্ক, জাপান, সৌদি আরব এবং অস্ট্রেলিয়া মার্কিন হামলার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। কিন্তু ফ্রান্স এবং জার্মানির প্রতিক্রিয়া ছিল সতর্ক। তারা সিরিয়ার সংকটের শান্তিপূর্ণ এবং রাজনৈতিক সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে। পরিস্থিতির যেন আরও অবনতি না ঘটে চীন সে জন্য সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে। বিবিসি, এএফপি

সর্বশেষ খবর