পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তুলে উত্তর কোরিয়ার দিকে রওনা হয়েছে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ও নৌসেনার স্ট্রাইক গ্রুপ। আর এই পদক্ষেপের মূল কারণ উত্তর কোরিয়া। দেশটির বেপরোয়া পরমাণু অস্ত্র কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতেই এই কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে মার্কিন নৌবাহিনীর পক্ষে জানানো হয়েছে। মার্কিন নৌবাহিনীর ইউএসএস কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বাধীন নৌবহরটির সিঙ্গাপুর থেকে অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মার্কিন নৌসেনার সেই স্ট্রাইক গ্রুপটি রওনা দিয়েছে কোরীয় উপদ্বীপের দিকে। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সম্প্রতি আমেরিকা সফর করেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে। জিনপিং-এর সেই আমেরিকা সফরের মধ্যেই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, চীন যদি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে আমেরিকা একাই পদক্ষেপ নিবে। ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পর ৪৮ ঘণ্টাও কাটেনি, আক্ষরিক অর্থেই উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করল আমেরিকা। যুদ্ধবিমান বহনকারী ইউএসএস কার্ল ভিনসনের নেতৃত্বে মার্কিন নৌসেনার প্যাসিফিক কমান্ডের একটি নৌবহর শনিবারই উত্তর কোরিয়ার দিকে রওনা দিয়েছে। প্যাসিফিক কমান্ডের মুখপাত্র কমান্ডার ডেভ বেনহ্যাম বলেছেন, ‘পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে আমাদের উপস্থিতি এবং প্রস্তুতি নিশ্চিত করতেই কার্ল ভিনসন স্ট্রাইক গ্রুপকে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’ বেনহ্যাম আরও বলেছেন, ‘ওই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় বিপদ হলো উত্তর কোরিয়া।’ কিম জং উনের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু কর্মসূচিকে ‘বেপরোয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং স্থিতিশীলতা ধ্বংসকারী’ আখ্যা দিয়েছেন তিনি। চলতি বছর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনসহ দেশটির কর্মকর্তারা একাধিকবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, তারা আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালাস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা বা একই ধরনের কোনো পরীক্ষা করতে যাচ্ছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ১৫ এপ্রিল উত্তর কোরিয়ার স্থপতি কিম ইল সাংয়ের ১০৫তম জন্মবার্ষিকীতে পরীক্ষাটি করা হতে পারে। এরমধ্যেই কোরীয় উপদ্বীপের দিকে রওনা দিল মার্কিন রণতরী। অবশ্য চীন এবং উত্তর কোরিয়াকে চাপে রাখতে মার্কিন নৌসেনা মাঝেমধ্যেই পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরে, দক্ষিণ চীন সাগরে বা জাপান সাগরে টহলদারি চালায়। কিন্তু নির্ধারিত কর্মসূচি ভেঙে এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার সংবলিত স্ট্রাইক গ্রুপকে উত্তর কোরিয়ার দিকে পাঠিয়ে দেওয়ার মতো পদক্ষেপ বেশ বিরল। স্বাভাবিকভাবেই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে উত্তেজনা অনেকখানি বেড়ে গেছে। কয়েক দিন আগেই সিরিয়ায় ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে আমেরিকা। এএফপি, বিবিসি