সোমবার, ১০ এপ্রিল, ২০১৭ ০০:০০ টা

আসাদকে রাসায়নিক অস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাজ্য!

আসাদকে রাসায়নিক অস্ত্র  দিয়েছে যুক্তরাজ্য!

ইদলিবে রাসায়নিক হামলায় আহত এক শিশুকে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে

সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত উত্তরাঞ্চলীয় ইদলিব প্রদেশে গত মঙ্গলবারের কথিত রাসায়নিক গ্যাস হামলায় কমপক্ষে ৮৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকশ মানুষ। এর জবাবে গত শুক্রবার দেশটির একটি বিমান ঘাঁটিতে সিরিজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। রাসায়নিক হামলা ও পাল্টা হামলা নিয়ে সিরিয়া ইস্যুতে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সরকারের ওপরও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ছে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, ইদলিবে ব্যবহূত রাসায়নিক অস্ত্র প্রেসিডেন্ট আসাদ পেল কোথায়? এক সময় রাসায়নিক অস্ত্র কর্মসূচি এগিয়ে নিতে আসাদ সরকারকে সহায়তা দিয়েছিল ব্রিটিশ সরকার। ফলে অভিযোগের তীর এখন ন্যায়সঙ্গতভাবেই যুক্তরাজ্যের দিকেই। আশির দশকে সারিন গ্যাস উৎপাদনে সিরীয় সরকারকে প্রয়োজনীয় রাসায়নিক সরবরাহ করার কথা স্বীকারও করেছে ব্রিটিশ সরকার। এ বিষয়টিকেই এখন তুলে ধরছেন মানবাধিকার কর্মী ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের পক্ষের গোষ্ঠীগুলো। ২০০০ সালের পরও সিরিয়ার কাছে রাসায়নিক অস্ত্র উৎপাদনের উপকরণ বিক্রি করেছে যুক্তরাজ্য। সেসব উপকরণ দিয়েই আসাদ সরকার রাসায়নিক অস্ত্র তৈরি করেছে বলে অভিযোগ তাদের। যুক্তরাজ্যের দেওয়া রাসায়নিক উপাদান দিয়ে আসাদ প্রাণঘাতী অস্ত্র তৈরি করছে— এমন অভিযোগের পর এ নিয়ে একটি তদন্ত শুরু করে দেশটির কমিটিস অন আর্মস এক্সপোর্ট কন্ট্রোলস (সিএইসি)। ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সিরিয়ায় রাসায়নিক উপকরণ সরবরাহে কোনো কোনো কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, তা জানতে চেয়ে তৎকালীন ব্রিটিশ বাণিজ্যমন্ত্রী ভিন্স ক্যাবলকে চিঠি দিয়েছে কমিটি। তবে চিঠির কোনো জবাব দেননি তিনি। এজন্য ভিন্স ক্যাবলের সমালোচনাও করেছে তারা। সিএইসির চেয়ারম্যান স্যার জন স্ট্যানলি বলেন, ‘বাণিজ্যমন্ত্রী কমিটির কাছে কোম্পানিগুলোর নাম প্রকাশ না করায় কমিটি তাদের কাছ থেকে কোনো প্রমাণ সংগ্রহ করতে পারেনি। এটা কমিটি এবং ব্রিটিশ হাউস অব কমন্সের জন্য ভয়াবহ। আমি পরেও বাণিজ্যমন্ত্রীর কাছে তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার জন্য লিখেছি।’  ক্যাম্পেইন এগেইনস্ট দ্য আর্মস ট্রেডের সংগ্রহ করা ২০০৮ সাল থেকে পাওয়া তথ্যগুলোতে দেখা যায়, গত নয় বছরে সিরীয় সরকারকে কোনো রাসায়নিক সরবরাহ করেনি যুক্তরাজ্য। তবে ২০১৪ সালে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হগ তার পার্লামেন্টকে নিশ্চিত করেছেস, যুক্তরাজ্য সিরিয়ায় যেসব রাসায়নিক রফতানি করেছিল, সেগুলোই ‘সিরীয় সরকারের কর্মসূচিতে ব্যবহূত হয়ে থাকতে পারে।’ এখন ধারণা করা হচ্ছে, সেই সময়ে পাঠানো রাসায়নিকগুলো সিরিয়ার সরকার সারিন গ্যাস উৎপাদনের কাজে ব্যবহার করে থাকতে পারে। দ্য গার্ডিয়ান।

সর্বশেষ খবর