বুধবার, ১০ মে, ২০১৭ ০০:০০ টা

জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় ‘কৃত্রিম সূর্য’

জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় ‘কৃত্রিম সূর্য’

মানুষের চিন্তারও শেষ নেই, শেষ নেই আবিষ্কারেরও। সেই আবিষ্কারের খাতায় এবার নাম যোগ হলো সূর্যের। অবশ্যই এটা কৃত্রিম। জার্মানির বিজ্ঞানীরা উদ্ভাবন করেছেন বড় আকৃতির কৃত্রিম সূর্য। কিন্তু কী কাজে লাগবে বিপুল পরিমাণে তাপ উৎপাদনকারী এই কৃত্রিম নক্ষত্র? সূর্যের উপস্থিতি প্রাণিজগতের জন্য অনেক জরুরি। কিন্তু সব দিন একইভাবে পৃথিবীতে সূর্য আলো ও তাপ ছড়ায় না। যে কারণে অনেক সময়ই বাধাগ্রস্ত হতে পারে মানুষের দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড। যখন পর্যাপ্ত সূর্যালোক থাকে না, তখন সোলার প্যানেল বা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন কাজ কীভাবে চলবে? যেহেতু সোলার প্যানেলের মূল খাবার আসে সূর্যের আলো থেকে, ফলে পৃথিবীর যেসব দেশে প্রায়ই সূর্যের দেখা মেলে না, তারা রীতিমতো বিপদে পড়েন। সেই সংকটের জবাব খুঁজতে গিয়ে জার্মানির বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন কৃত্রিম এক সূর্য, যাকে বলা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় কৃত্রিম সূর্য। বিজ্ঞানীদের এ দলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন ড. কাই উইগহার্ট, যিনি জার্মানির ইনস্টিটিউট অব সোলার রিসার্চের প্রধান। তিনি বলছেন, এই সূর্যের মাধ্যমে আমরা নিরবচ্ছিন্ন কৃত্রিম আলো পাব, যা খুবই প্রয়োজনীয়। বিশেষ করে পশ্চিম জার্মানির মতো জায়গায়, যেখানে প্রতিদিন সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না এবং আবহাওয়াও খুব একটা ভালো নয়।

কীভাবে কাজ করে এই কৃত্রিম সূর্য : ১৪৯টি ফিল্ম প্রজেকশন লাইট একত্রিত করে আলো প্রক্ষেপণ করা হয়। আর সেই সম্মিলিত আলো প্রতিদিন সূর্যের যে রশ্মি পৃথিবীতে আলো ছড়ায় তার থেকে ১০ হাজার গুণ বেশি শক্তিশালী। এই আলোর মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা আগামী দিনের সোলার বা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারছেন। ড. কাই এটিকে এখনো একটি নিরীক্ষা বলেই অভিহিত করছেন। তিনি বলছেন, এটা আমাদের প্রথম নিরীক্ষাগুলোর একটি, যেটি খুবই সাধারণ আর প্রথাগত। একে আপনি একটি সোলার হাইড্রোজেন রিঅ্যাক্টর বলতে পারেন। এই রিঅ্যাক্টরের মাধ্যমে সৌরশক্তি ব্যবহার করে আমরা পানিকে ভাগ করে ফেলার প্রক্রিয়া তৈরি করছি। এর ফলে আমরা শক্তি সঞ্চয় করে রাখতে পারব এবং সেটিকে সামনের দিনে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। নির্দিষ্ট কোনো একটি দিকে আলো প্রক্ষেপণ করলে, সেটি কোনো এলাকাকে প্রায় তিন হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উত্তপ্ত করে তুলতে পারবে। যা যেকোনো জ্বলন প্রক্রিয়ার চেয়ে বেশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, যেহেতু হাইড্রোজেন পুড়লে কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্যাস উত্পন্ন হয় না, তাই ভবিষ্যতে হাইড্রোজেনকেই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা উচিত হবে। বিজ্ঞানীদের বানানো এই কৃত্রিম সূর্যটির যে বিশাল এক যন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালনা করা হচ্ছে, তার উচ্চতা তিনতলা একটি ভবনের সমান। বিবিসি বাংলা।

সর্বশেষ খবর