বৃহস্পতিবার, ২০ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

ভারতকে যুদ্ধের হুমকি চীনের

ভারতকে যুদ্ধের হুমকি চীনের

চীন, ভারত ও ভুটানের সীমান্তের দোকলাম এলাকায় মাসখানেকের বেশি সময় ধরে চীন ও ভারতের বাহিনী পরস্পরের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যে ভারতকে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দিল চীন। তবে নয়াদিল্লি মনে করছে, পরিস্থিতি এখনো এমন জায়গায় পৌঁছয়নি, যাতে ভারত যুদ্ধে যেতে বাধ্য হয়। দোকলাম পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেছে চীন। চীনের ভাষ্য, দোকলাম এলাকায় ভারতীয় সেনার ‘অনুপ্রবেশ’-এর জবাব দিতে অনন্তকালের জন্য ধৈর্য ধরতে রাজি নয় তারা। চীনের সরকারি সংবাদপত্র ‘গ্লোবাল টাইমস’-এও ভারতকে সরাসরি যুদ্ধের হুমকি দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘ভারত যদি সংঘাত বাড়িয়ে যায়, তা হলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) জুড়ে সর্বাত্মক সংঘাতের পরিস্থিতির সামনে পড়তে হবে তাদের। চীন ভারতের সঙ্গে যুদ্ধ চায় না। তবে যুদ্ধে যেতে ভয়ও পাচ্ছে না, দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধের জন্যও বেজিং প্রস্তুত।’ এদিকে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লু কাং মন্তব্য করেছেন, ‘রাজনৈতিকভাবে কাউকে নিশানা করতে গিয়ে ভারত যেন দোকলামে অনুপ্রবেশকে  তাদের নীতি হিসেবে না দেখে।’

এ অবস্থায় গত পরশু ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটি জরুরি বৈঠকে বসে। আলোচনার প্রধান ইস্যু ছিল চীন। বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয়শঙ্কর তাদের অবস্থানের ব্যাখ্যা দেন। তার দাবি দোকলাম সমস্যা এমন পর্যায়ে পৌঁছয়নি, যাতে ভারত চীনের বিরুদ্ধে সামরিক ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হয়। তবে পরিস্থিতি ‘স্পর্শকাতর’ বলেই জানান পররাষ্ট্র সচিব। জয়শঙ্কর বলেন, চীন সব সময়ই সংঘাতের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে থাকে। যদিও এবার তারা অনেক বেশি আক্রমণাত্মক। তিনি বলেন, ভারত ধীরেসুস্থে পদক্ষেপ করতে চাইছে, জোর দিচ্ছে কূটনীতির পথে। সিকিম সীমান্তে দোকলামে ভারত ও চীনের সেনা প্রায় এক মাস মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। ১৯৬২ সালের পর এমন ঘটনা কখনো ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে চীন জানিয়েছে, যতক্ষণ না সেনা সরাচ্ছে ভারত, ততক্ষণ কূটনীতির পথে এগোনোর প্রশ্ন নেই। এদিকে দোকলাম বা দোং লং এলাকার পরিস্থিতি নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে যে কোনো সময় যুদ্ধ লেগে যেতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে সংবাদ প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক এক্সপ্রেস ট্রিবিউন। ওই এলাকায় বিপুল অস্ত্রের মজুদও করেছে দুই দেশ।  গত জুন মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে দুর্গম ‘দোকলাম’ মালভূমিতে চীন ও ভারতের সেনারা একে অপরের ‘চোখে চোখ’ রেখে চলছে এবং অত্যন্ত আগ্রাসী অবস্থান নিয়েছে। দুই দেশই সেখানে ভারী অস্ত্রের মজুদ ঘটাচ্ছে। এমন উপস্থিতির পরও সেখানে সেনা সংঘর্ষের কোনো ঘটনা ঘটেনি, তবে চীনের বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ‘সেখানে যুদ্ধ শুরু হতে পারে’। ভারতের হাতে বর্তমানে ১০০র বেশি পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে; অন্যদিকে চীনের হাতে এ ধরনের ওয়ারহেড রয়েছে ২৫০টির বেশি। গতমাসে চীন একটি রাস্তা তৈরি করতে গেলে ভারত তাতে বাধা দেয় এবং সেখান থেকে চলমান উত্তেজনা শুরু হয়। চীন বলছে, নিজের সীমান্তে তারা রাস্তাটি তৈরির চেষ্টা করছিল। দীর্ঘদিন ধরে ভারত দাবি করে আসছে- চীন তার আড়াই লাখ বর্গকিলোমিটার এলাকা   দখল করে রেখেছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া

সর্বশেষ খবর