শুক্রবার, ২৮ জুলাই, ২০১৭ ০০:০০ টা

‘বন্ধু’ বদল করে ফের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ

রাজনৈতিক শিক্ষা পেলেন লালু প্রসাদ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

‘বন্ধু’ বদল করে ফের মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ

মুখ্যমন্ত্রী নীতিশের সঙ্গে নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদি (বামে)

বিহারের দুই ঝানু রাজনীতিবিদ নীতিশ কুমার ও লালু প্রসাদ যাদব। ২০ মাস আগে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ভুলে দুজনে মিলে বিহারের সরকার গঠন করেন। সেই সরকারে নীতিশ হন মুখ্যমন্ত্রী ও লালুর ছেলে তেজস্বী যাদব হন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু গত পরশু দুর্নীতির সঙ্গে কোনো আপস নয় জানিয়ে পদত্যাগ করেন মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ। দুর্নীতির ওই অভিযোগের তীর উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বীর বিরুদ্ধে। এর পর লালু প্রসাদের সঙ্গে এতদিনের বন্ধুত্বের ছেদ ঘটিয়ে নতুন বন্ধু পাতেন বিজেপির সঙ্গে। আর এই রাজনৈতিক বাতাবরণে বন্ধুত্বের হাতবদল করে ১৫ ঘণ্টার ব্যবধানে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ফের শপথ নিলেন নীতিশ কুমার। গতকাল সকালে রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর কাছে শপথ নেন তিনি। তার সঙ্গে রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নতুন বন্ধু বিজেপি নেতা সুশীল মোদিও। সংবিধান মেনে নীতিশকে বিধানসভায় আস্থা ভোটের জন্য দুই দিন সময় দিয়েছেন রাজ্যপাল। আজ বিধানসভায় আস্থাভোটে যাবেন ‘নয়া’ মুখ্যমন্ত্রী। ২৪৩ সদস্যবিশিষ্ট বিহার বিধানসভায় সরকার গঠনের জন্য দরকার ১২২ জন বিধায়কের সমর্থন। সেখানে নীতিশ কুমার সরকারের কাছে রয়েছে ১৩২ জন বিধায়কের সমর্থন। এর মধ্যে জেডিইউয়ের বিধায়ক রয়েছে ৭১ জন, বিজেপির ৫৩, আরএলএসপি-এর ২, এলজেপির ২ জন, এইচএএমের ১ ও স্বতন্ত্র দলের ৩ জন। গতকাল শপথ গ্রহণের পর রাজভবনের একতলার কনফারেন্স রুমে রাজ্যপালের সঙ্গে সকালের নাস্তা  সারেন নীতিশ-সুশীল। সঙ্গে ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জেপি নাড্ডাসহ বিজেপি এবং জেডিইউ-এর একাধিক নেতা। আপাতত এই মন্ত্রিসভার দুজন সদস্য নীতিশ এবং সুশীল। নয়া মন্ত্রিসভায় কারা থাকবেন, তা এখনো ঠিক হয়নি। তবে নীতিশের দলের ১৩ জন ও বিজেপির ১৩ জন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাচ্ছেন বলে জানা গেছ। ২০১৫-র নভেম্বরে বিহারে নীতিশের জেডিইউ-এর সঙ্গে মহাজোট গড়ে ওঠে লালুপ্রসাদের আরজেডি। ওই মহাজোটই রাজ্যে সরকার গড়ে। মুখ্যমন্ত্রী হন নীতিশ কুমার। কিন্তু যত দিন গড়ায় দুই পক্ষের মধ্যে দূরত্ব স্পষ্ট হতে থাকে। গত আড়াই বছরে সেই সম্পর্ক প্রায় তলানিতে এসেই ঠেকেছিল। মহাজোটের সবচেয়ে বড় দল আরজেডি নেতা এবং রাজ্যের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পর থেকেই তেজস্বীর ওপরে পদত্যাগের চাপ বাড়ছিল। কিন্তু আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব ছেলের ইস্তফায় রাজি না হওয়ায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে ইস্তফা দেন নীতিশ কুমার। সেই সঙ্গেই মহাজোটও ভেঙে যায়। এরপর রাতের দিকেই নীতিশ কুমারকে সমর্থনের কথা জানায় বিজেপি।

সর্বশেষ খবর