পাকিস্তানের ইতিহাস ৭০ বছরের। যে ইতিহাস অধরাই রয়ে গেল; কোনো প্রধানমন্ত্রীই তার মেয়াদ শেষ করতে পারলেন না। পূর্বসূরিদের মতোই পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই গতকাল প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে হলো নওয়াজ শরিফকে। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ সম্পদের উৎস জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় গতকাল প্রধানমন্ত্রী পদে নওয়াজকে অযোগ্য ঘোষণা করে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। এর কিছুক্ষণ পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন নওয়াজ। এর আগেও তিনি দুবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু অবস্থা একই ছিল। ১৯৯০ সালে প্রথমবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর ১৯৯৩ সালে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই দুর্নীতির কারণে প্রধানমন্ত্রিত্ব চলে যায় নওয়াজের। দ্বিতীয়বার ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রী হয়ে ১৯৯৯ সালে সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতা হারান তিনি। ৭০ বছরের ইতিহাসে পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই ১৯৫১ সালের ১৬ অক্টোবর রাওয়ালপিন্ডিতে খুন হন তিনি। এরপর প্রধানমন্ত্রী হন খাজা নাজিমুদ্দিন। দুই বছর না যেতেই তাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন মোহাম্মদ আলী (বগুড়া)। দুই বছরের কিছু বেশি সময় পর ১৯৫৫ সালের ১২ আগস্ট গভর্নর জেনারেল ইস্কান্দার মির্জা বরখাস্ত করেন মোহাম্মদ আলীকে। এরপর প্রধানমন্ত্রী হন চৌধুরী মোহাম্মদ আলী। তিনি ক্ষমতায় ছিলেন ১৩ মাস। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পান ১৯৫৬ সালের ১২ সেপ্টেম্বর। তিনিও এক বছর পর ক্ষমতা ছেড়ে দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রিত্ব পান ইব্রাহিম ইসমাইল। মাত্র দুই মাসের মাথায় পদত্যাগ করেন তিনি। এরপর আসেন ফিরোজ খান নূন। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান সামরিক আইন জারি করলে ফিরোজ খানের সরকার ভেঙে যায়। এরপর ক্ষমতায় আসেন জুলফিকার আলী ভুট্টো, মোহাম্মদ খান (১৯৮৫-৮৮), বেনজির ভুট্টো (১৯৮৮-৯০), গোলাম মুস্তফা (১৯৯০), মইনুদ্দিন আহমেদ কুরেশি (১৯৯৩), বেনজির ভুট্টো (১৯৯৩-১৯৯৬), মালিক মেরাজ খালিদ (১৯৯৬-১৯৯৭), জাফরুল্লাহ খান জামালি (২০০২-২০০৪), সুজাত হোসেন (২০০৪), শওকত আজিজ (২০০৪-২০০৭), মোহাম্মদ মিয়া সুমরো (২০০৭-২০০৮), ইউসুফ রাজা গিলানি (২০০৮-২০১২), রাজা পারভেজ আশরাফ (২০১২-২০১৩) ও মির হাসান খান খোসা (২০১৩)। কেউই পাঁচ বছরের মেয়াদ পূরণ করতে পারেননি। দ্য ডন।
