শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

ট্রাম্পকে মানসিক বিকারগ্রস্ত দুর্বল আমেরিকান বললেন কিম

শক্তিশালী ‘হাইড্রোজেন বোমার’ পরীক্ষারও হুমকি

ট্রাম্পকে মানসিক বিকারগ্রস্ত দুর্বল আমেরিকান বললেন কিম

ডোনাল্ড ট্রাম্প - কিম জং উন

হামলার শিকার হলে উত্তর কোরিয়াকে ‘সম্পূর্ণরূপে ধূলিসাৎ’ করে দেওয়া হবে বলে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির কড়া জবাব দিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। এক বিবৃতিতে ট্রাম্পকে ‘মানসিক বিকারগ্রস্ত দুর্বল আমেরিকান’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে উত্তর কোরিয়া প্রসঙ্গে জাতিসংঘে দেওয়া তার বক্তব্যের জন্য কড়া মূল্য দিতে হবে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা কেসিএনএ’তে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত ইংরেজি ভাষায় লেখা ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ট্রাম্পের মন্তব্য উত্তর কোরীয় নেতাকে ভীত বা পরমাণু কর্মসূচি থেকে সরে আসা নয়, বরং এ নিয়ে উত্তর কোরিয়া যে সঠিক পথেই আছেন এ ব্যাপারে তাকে আরও আশ্বস্ত করেছে এবং  তিনি এর শেষ দেখে ছাড়বেন।

এদিকে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার চলমান বাকযুদ্ধে উদ্বিগ্ন চীন ও রাশিয়া সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে উসকানিমূলক কথাবার্তা বন্ধ করে সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছেন। গত মঙ্গলবার জাতিসংঘে দেওয়া প্রথম ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প উত্তর কোরিয়াকে ‘সম্পূর্ণরূপে ধূলিসাৎ’ করে দেওয়ার ওই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন। উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উনকে ‘রকেট ম্যান’ আখ্যায়িত করে ট্রাম্প তার ভাষণে আরও বলেছিলেন যে, কিম উন তার পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আত্মঘাতী মিশনে শামিল হয়েছেন। হামলা হলে তা মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র পুরোপুরি প্রস্তুতও আছে জানিয়ে ট্রাম্প উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে আরও অবরোধ আরোপ করে দেশটিকে বিশ্ব সম্প্রদায় থেকে আরও বিছিন্ন করে দেওয়ার জন্য জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘অভূতপূর্ব কর্কশ আবর্জনা’ হিসেবে বর্ণনা করে কিম উন তার বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শব্দ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে আরও সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের শ্রবণসমস্যাও রয়েছে জানিয়ে কিমের ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘মার্কিন ওই বয়স্ক ব্যক্তি (যার শ্রবণজনিত সমস্যা রয়েছে) যিনি কিনা নিজে যা চান কেবল তা-ই বলে যাচ্ছেন তাকে মোকাবিলায় অ্যাকশন-ই হচ্ছে সেরা উপায়।’ ট্রাম্পের হুঁশিয়ারি ও হুমকি-ধমকি সত্ত্বেও পিয়ংইয়ং তার পরমাণু কর্মসূচি পরিত্যাগ করবে না বলেও বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলেছেন কিম। এদিকে, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারির সমালোচনা করে উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি ইয়ং-হো সতর্কতা উচ্চারণ করেছেন যে, পিয়ংইয়ং প্রয়োজনে প্রশান্ত মহাসাগরে একটি হাইড্রোজেন বোমারও পরীক্ষা চালাতে পারে। দক্ষিণ কোরিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা ইয়নহ্যাপ রি’র বরাতে জানায়, ‘প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এটা হতে পারে সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষা।’ তবে উত্তর কোরিয়ার ওপর যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা কেবল কিম জং উন-ই নির্দেশ দেবেন বলেও যোগ করেন তিনি। এর আগে বুধবার ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘কুকুরের ঘেউঘেউ ধ্বনি’র সঙ্গে তুলনা করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রি।  অপরদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও কিম জন উনকে ‘নিশ্চিত পাগল’ (ম্যাডম্যান) হিসেবে আখ্যায়িত করে বলেছেন, উত্তর কোরীয় এই নেতাকে অভূতপূর্বভাবে মোকাবিলা করা হবে। কিমের তরফে হুমকির কয়েক ঘণ্টা পর দেওয়া এক টুইট বার্তায় একথা বলেন ট্রাম্প। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে অবরোধ আরও জোরদার করার জন্য নতুন একটি নির্দেশেও স্বাক্ষর করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পিয়ংইয়ংয়ের সঙ্গে ব্যবসা করছে এমন ব্যক্তি, কোম্পানি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মার্কিন অর্থ বিভাগের নেওয়া এ ব্যবস্থার আওতায় পড়বে। বিবিসি, রাশিয়া টুডে।

সর্বশেষ খবর