শনিবার, ২১ অক্টোবর, ২০১৭ ০০:০০ টা

বাবরি মসজিদের মতো তাজমহলও ধ্বংস করা হতে পারে!

ভারতে মুঘল ঐতিহ্যের প্রতীক বাবরি মসজিদের মতো সম্রাট শাহজাহানের প্রেমের সৌধ তাজমহলকেও উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ধ্বংস করে ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা ব্যক্ত করেছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান। উত্তর প্রদেশে বিজেপি সরকারের শাসনের ৬ মাস উপলক্ষে রাজ্যের পর্যটন দফতর থেকে সম্প্রতি ঐতিহাসিক স্থাপনার একটি পুস্তিকা বের করা হয়। তালিকায় মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যে মন্দিরের প্রধান, গোরক্ষপুরের সেই গোরখনাথ মন্দিরের নাম থাকলেও বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম তাজমহলের নাম রাখা হয়নি। এর পর থেকেই বিতর্ক শুরু। পরে অবশ্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে তালিকায় তাজমহলের নাম অন্তর্ভুক্ত করে রাজ্য সরকার। এ বিতর্কের মধ্যেই তাজমহলের বিরুদ্ধে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনীতিকরা বিষোদগার করেই যাচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের মুসলিম সভ্যতার অন্যতম প্রতীক নিয়ে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন সমাজবাদী পার্টির নেতা আজম খান। তিনি বলেন, ‘যদি বাবরি মসজিদ গুঁড়িয়ে দেওয়া যায়, তা হলে ভারতের যে কোনো সৌধই ভেঙে ফেলা হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে যে কোনো দিন তাজমহল ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। টাইমস নাউ।

এতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। দেশের কোনো সৌধই এখন আর নিরাপদ নয়।’  তিনি আরও বলেন, ‘তাজমহলের আন্তর্জাতিক খ্যাতি রয়েছে বলেই ওই সৌধ এখনো দাঁড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু রাম মন্দিরের নামে যারা বাবরি মসজিদ ভাঙতে পারেন, তারা সবই করতে পারেন।’

তাজমহল নিয়ে আদিত্যনাথ সরকারের আচরণে ভারতে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে উত্তর প্রদেশের বিজেপির এমপি সঙ্গীত সোম বলেন, ‘তাজমহল ভারতীয় সংস্কৃতিতে কলঙ্কের চিহ্ন।’

বিজেপির এমপি ও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা বিনয় কাটিয়ার দাবি, ‘তাজমহলের নাম পরিবর্তন করে ‘তেজো মহল’ রাখতে হবে।’ তার মতে, মন্দির ভেঙে তাজমহল নির্মাণ করা হয়েছে। বুধবার আরেক বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী দাবি করেন, যে জমিতে তাজমহল দাঁড়িয়ে আছে, তা জয়পুরের রাজাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছিলেন মুঘল সম্রাট শাহজাহান।

স্বামীর মতে, ‘আমার হাতে এমন নথি এসেছে, যা থেকে স্পষ্ট যে জয়পুরের রাজামহারাজাদের তাজমহলের জমিটি বিক্রিতে বাধ্য করেছিলেন শাহজাহান। ক্ষতিপূরণ বাবদ সেই রাজাদের ৪০টি গ্রাম দেওয়া হয়েছিল। যাকে কোনোভাবেই ওই জমির দামের সঙ্গে তুলনা করা যায় না।’  তিনি আরও বলেন, ‘নথিতে আরও দেখা যাচ্ছে ওই জমিতে একটি মন্দির ছিল। কিন্তু মন্দির ভেঙেই তাজমহল বানানো হয়েছিল, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।’ শিগগির ওই নথি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ করবেন বলেও জানিয়েছেন স্বামী।

সর্বশেষ খবর