মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০১৭ ০০:০০ টা

সৌদি আরব ও ইরান দ্বন্দ্বের মূলে

মধ্যপ্রাচ্যে নিজের শক্তির জানান দিতে সব সময় মরিয়া সৌদি আরব ও ইরান। ইরান মূলত ইসলামের একটি অংশ শিয়াদের নেতৃত্ব দেয় আর সৌদি দেয় সুন্নি মতাবলম্বীদের। কিন্তু দিনে দিনে দুই দেশের মধ্যে বৈরিতা চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। ঐতিহাসিকভাবেই সৌদি আরব নিজেকে মুসলিম বিশ্বের নেতা মনে করে। কারণ, এখানেই ইসলাম ধর্মের সৃষ্টি। কিন্তু সৌদি আরবের একচ্ছত্র নেতৃত্বে প্রথম চ্যালেঞ্জ আসে ১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামী বিপ্লবের পর। অর্থনীতি সমরনীতি সব কিছুতেই সৌদির প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠার চেষ্টা করে দেশটি। পাশাপাশি ইরান বিপ্লবের পরেই দেশটি মধ্যপ্রাচ্যে ধর্মীয় রাষ্ট্রভিত্তিক রাষ্ট্রে পরিণত হয় যা বিশ্বের অন্যতম ইসলামী রাষ্ট্র। আর তখন থেকেই নিজেদের এই ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রের মডেল নিজ সীমানা ছাড়িয়ে অন্যত্রও প্রসার ঘটানোর চিন্তা শুরু করে ইরানের নেতারা। আর এ থেকেই বৈরিতার মূল শুরু। কিন্তু ১৫ বছর ধরে সৌদি আরব ও ইরানের মতপার্থক্য তীব্র হয়েছে বিশেষ কিছু ঘটনার প্রেক্ষাপটে। ২০০৩ সালে আমেরিকার ইরাক আক্রমণের পর ক্ষমতাচ্যুত হন ইরাকের নেতা সাদ্দাম হোসেন। শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ ইরাকে সুন্নি আরব সাদ্দাম হোসেন ছিলেন ইরানের বড় শত্রু। সাদ্দামের পতনের ফলে স্বাভাবিকভাবেই ইরাকে ইরানের প্রভাব বাড়তে থাকে। এরপর ২০১১ সালে আরব বিশ্বে ছড়াতে থাকে এক নজিরবিহীন গণঅভ্যুত্থান ‘আরব বসন্ত’। দেশে দেশে দেখা দেয় অস্থিতিশীলতা। ইরান ও সৌদি আরব এই সুযোগে নিজেদের প্রভাব বাড়াতে সচেষ্ট হয়ে উঠে। আর তখনই বাধে সংঘাত। সিরিয়া, বাহরাইন ও ইয়েমেন হয়ে উঠে দেশ দু’টির লড়াইয়ের ক্ষেত্র। ইরানের সমালোচকরা বলেন, মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে নিজেকে ও নিজের প্রক্সি সংগঠনগুলোকে প্রতিষ্ঠিত করতে এবং নিজ সীমান্ত থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত স্থল করিডোর পেতে দেশটি চরম পথে এগোচ্ছে। কিন্তু কেন হঠাৎ পরিস্থিতি এত উত্তপ্ত? দুই দেশের কৌশলগত দ্বন্দ্ব এখন বেশ উত্তপ্ত রূপ ধারণ করেছে, কারণ ইরান অনেক দিক থেকেই লড়াইয়ে জিতে চলেছে। সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের প্রতি ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সমর্থনের কারণেই সৌদি আরবের সমর্থনপুষ্ট বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো পিছু হটেছে।

ইরানের ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে সৌদি আরব মরিয়া হয়ে উঠছে। সৌদির অল্পবয়সী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর নীতি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিবিসি।

সর্বশেষ খবর