মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮ ০০:০০ টা

মালদ্বীপে জরুরি অবস্থা

* ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা
* বিচারপতিরা গ্রেফতার হলে আইনি সুবিধা পাবেন না

সুপ্রিম কোর্ট ও সরকার চরম দ্বন্দ্বের মধ্যে মালদ্বীপে ১৫ দিনের জরুরি অবস্থা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ ইয়ামিন। দেশটির আইনমন্ত্রী আজিমা শাকুর গতকাল টেলিভিশনে এই জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইব্রাহিম মুয়াজ আলি জানান, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫৩ অনুযায়ী প্রেসিডেন্টের ক্ষমতাবলে দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। জরুরি অবস্থায় বিচারপতিরা আটক বা গ্রেফতার হলে সেক্ষেত্রে বিশেষ কোনো আইনি সুবিধা তারা পাবেন না।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়, জরুরি অবস্থায় সুনির্দিষ্ট কিছু অধিকারের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও জনগণের চলাফেরা, চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রভাব পড়বে না। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সরকার দেশের জনগণ এবং বিদেশিদের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে চায়। দেশটির সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতি আবদুল্লাহ সাইদ গত বৃহস্পতিবার সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ নয় রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দিতে আদেশ দেন। ওই আদেশে ইয়ামিন সরকারের হাতে বরখাস্ত হওয়া পার্লামেন্টের ১২ সাংসদকে স্বপদে বহালের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু প্রেসিডেন্ট সেই আদেশ না মানার ঘোষণা দেন। এতেই মূলত দেশটিতে রাজনৈতিক সংকটের সৃষ্টি হয়।

আদালতের ওই রায়ের পর মালদিভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট মালদ্বীপের ৮৫ সদস্যের পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে যায়। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনকে অভিশংসন করা হতে পারে ধারণার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রেসিডেন্ট অনির্দিষ্টকালের জন্য পার্লামেন্টের কার্যক্রম স্থগিত করে দেন।  কারাবন্দী নেতাদের মুক্তির দাবিতে দেশটির প্রধান বিরোধী দল মালদিভিয়ান ডেমোক্র্যাটিক পার্টি আগামীকাল দেশজুড়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিল বলে জানায় বিবিসি।

বিরোধী দলের এমপি ইভা আবদুল্লাহ বলেন, জরুরি অবস্থা জারি প্রেসিডেন্ট ইয়ামিনের ‘মরিয়া ভাবের কথাই বলছে’। তিনি বলেন, ‘এটা একজন মানুষের বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ার কথাই বলছে, যার মালদ্বীপের জনগণ এবং স্বাধীনতার ওপর আর কোনো আস্থা নেই। গণতান্ত্রিকভাবে দেশ শাসনের কোনো অধিকার তার আর নেই এবং তার উচিত দ্রুত পদত্যাগ করা।’ উল্লেখ্য, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে করা সরকারের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলে সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ নাশিদসহ নয় বিরোধী নেতার জেল হয়। সুপ্রিম কোর্ট সম্প্রতি এ রায়কে বাতিল করে তাদের মুক্তির নির্দেশ দেয়। সাবেক প্রেসিডেন্ট নাশিদ শ্রীলঙ্কায় স্বেচ্ছা নির্বাসনে আছেন। মালদ্বীপ সরকারকে আইনের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসি, রয়টার্স।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর