শিরোনাম
শুক্রবার, ৯ মার্চ, ২০১৮ ০০:০০ টা

শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম কর্তৃপক্ষ

শ্রীলঙ্কার পরিস্থিতি সামলাতে হিমশিম কর্তৃপক্ষ

শ্রীলঙ্কায় কয়েকদিন ধরে বৌদ্ধদের সঙ্গে সংখ্যালঘু মুসলিমদের দাঙ্গার পর দেশটির ক্যান্ডি শহরে জারি করা কারফিউ সাময়িকভাবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত প্রত্যাহার করা হয়। তবে অবস্থা স্বাভাবিক করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। এদিকে ক্যান্ডিতে মুসলিমদের ওপর হামলা ও সহিংসতা ঠেকাতে আরও সৈন্য নিয়োজিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। সেনাবাহিনীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এদিকে পুলিশ দাঙ্গা থামাতে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হামলাকারীদের লক্ষ্য করে টিয়ারগ্যাস ছোড়েছে। গতকাল একটি মসজিদের কাছ থেকে বিশাল আকারের একটি পেট্রলবোমা উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত দাঙ্গাবাজ হিসেবে ৮৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যারা সবাই বৌদ্ধ। সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সিনহালারা বিভিন্ন মসজিদ এবং মুসলিমদের মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়েছিল। মুসলমানদের সঙ্গে বিবাদকে কেন্দ্র করে একজন বৌদ্ধ তরুণের মৃত্যুর খবরে তারা কারফিউ উপেক্ষা করে এসব হামলা চালায়। রবিবার শহরটির দুই সম্প্রদায়ের লোকজনের মধ্যে ঝগড়ার জেরে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। বৌদ্ধ দাঙ্গাকারীরা একটি মসজিদ ও মুসলিম মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় জরুরি অবস্থা জারি করেন প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। বুধবার রাতে ও বৃহস্পতিবার সকালে ক্যান্ডির পরিস্থিতি শান্ত ছিল বলে জানিয়েছে সামরিক বাহিনী। মেজর জেনারেল রুকমান ডিয়াস বলেছেন, ‘পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। গত ১২ ঘণ্টায় কোনো বড় ধরনের সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি।’ সন্ধ্যায় ক্যান্ডিতে ফের কার্ফু বহাল হতে পারে বলে জানিয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার বৌদ্ধদের জোর করে ইসলাম ধর্মে দিক্ষিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করে আসছিল কয়েকটি কট্টরপন্থি বৌদ্ধ গোষ্ঠী। পাশাপাশি বৌদ্ধ পুরাতাত্ত্বিক স্থানগুলো ভাঙচুরের জন্যও মুসলমানদের দায়ী করে আসছিল তারা। গতবছরের শেষে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার থেকে মুসলমান রোহিঙ্গারা শ্রীলঙ্কায় গিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করলে তাতে আপত্তি জানিয়ে সরব হয়ে উঠে দেশটির কয়েকটি বৌদ্ধ জাতীয়তাবাদী গোষ্ঠী। এসব নিয়ে দেশটিতে এ দুটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এরকম এক পরিস্থিতিতেই ক্যান্ডিতে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়। পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকার ১০ দিনের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে ও দাঙ্গার উসকানি রোধ করতে তিন দিনের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ভাইবার ও হোয়াটঅ্যাপ ব্লক করে দেয়। তারপরও বুধবার কার্ফু চলার মধ্যেই ক্যান্ডিতে একটি গ্রেনেড বিস্ফোরণে একজন নিহত ও আরও তিনজন আহত হন। শ্রীলঙ্কার দুই কোটি ১০ জনসংখ্যার মধ্যে নয় শতাংশ মুসলিম। জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ বৌদ্ধ এবং ১৩ শতাংশ তামিল যাদের অধিকাংশই হিন্দু। বিবিসি, এএফপি।

সর্বশেষ খবর