ফিলিস্তিন জবরদখল করে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার ৭০তম বার্ষিকীতে পবিত্র ভূমি বায়তুল মোকাদ্দাস বা  জেরুজালেমে আয়োজন করা হয় মার্কিন দূতাবাস খোলার উৎসব। ওদিকে মাতৃভূমিতে ফেরার ন্যায়সঙ্গত অধিকার আদায়ের আন্দোলনে রত ফিলিস্তিনিদের ওপর বর্বরতা চালায়  হাজারো ইসরায়েলি সেনা। এসব সেনা হায়েনার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর। সর্বশেষ পাওয়া হিসাব মতে, সোমবারের পাশবিকতায় মারা গেছেন কমপক্ষে ৬০ ফিলিস্তিনি; আহত হয়েছেন আরও ২,৭৭১ জন।  যুদ্ধের সময় ছাড়া একদিনে ইসরায়েলি হামলায় এত বেশি ফিলিস্তিনির হতাহত হওয়ার ঘটনা বিরল। মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষকরা বলছেন, পশ্চিমাদের পৃষ্ঠপোষকতা নিয়ে ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যে অপরাধযজ্ঞ চালাচ্ছে তার যেন কোনো শেষ নেই বরং দিন দিন তার মাত্রা তীব্রতর হচ্ছে। ফিলিস্তিনিরা প্রতি বছর ১৫ মে মাতৃভূমি হারানোর বার্ষিকীতে ‘নাকাবা’ বা মহাবিপর্যয় দিবস পালন করেন। নাকাবা দিবসে ফিলিস্তিনিরা যে শুধু তাদের মাতৃভূমি হারিয়েছেন তা নয় সেইসঙ্গে গত ৭০ বছরে তারা যত রকম মানবিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয়েছেন তার সবকিছুর সূত্রপাত হয়েছিল এ দিনে। আর ফিলিস্তিনি জাতিকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মানবতার শত্রু  ইসরায়েল নামক রাষ্ট্র।

৬৭৫টিরও বেশি ফিলিস্তিনি গ্রাম ও শহর ধ্বংস করে ইহুদি উপশহর নির্মাণ, ফিলিস্তিনিদের তাদের আবাসভূমি থেকে বিতাড়ন, ফিলিস্তিনের জাতীয় পরিচিতিগুলো মুছে ফেলা এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের আরবি নামগুলো বাতিল করে হিব্রু ভাষায় নতুন নামকরণ করা ছিল ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার পর ইহুদিবাদীদের কিছু ন্যক্কারজনক কাজ।

নির্যাতিত ফিলিস্তিনিদের ওপর ইহুদিবাদীরা যেসব ভয়াবহ গণহত্যা চালিয়েছে সেগুলোর মধ্যে ‘কুফার কাসেম’ ও ‘দেইর ইয়াসিনের’ নাম উল্লেখযোগ্য। ১৯৫৬ সালের ২৯ অক্টোবর জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে অবস্থিত কুফার কাসেম গ্রামে হানা দিয়ে ইসরায়েলি সেনারা ৬ নারী ও ২৩ শিশুসহ ৪৮ ফিলিস্তিনিকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এর আগে ১৯৪৮ সালের ৯ এপ্রিল ইহুদিবাদীদের দুটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী বায়তুল মুকাদ্দাসের নিকটবর্তী দেইর ইয়াসিন গ্রামে গণহত্যা চালায়।  এতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৩৬০ নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি নির্মমভাবে নিহত হন।

এ ধরনের গণহত্যা যে গত ৭০ বছর ধরে অব্যাহতভাবে চলে এসেছে। গত পরশু ৬০ জনকে হত্যা করে।