শুক্রবার, ২০ জুলাই, ২০১৮ ০০:০০ টা

পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে সেনা বিতর্ক

বিবিসিকে ডন-প্রধানের সাক্ষাৎকার

পাকিস্তানে নির্বাচনের আগে সেনা বিতর্ক

পাকিস্তানে নির্বাচনের আর এক সপ্তাহ বাকি নেই। আগামী বুধবার হওয়া নির্বাচনের আগে বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দেন পাকিস্তানের শীর্ষস্থানীয় ইংরেজি দৈনিক ডনের প্রধান হামিদ হারুন। কিন্তু তার এই সাক্ষাৎকার দেশটিতে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। সাক্ষাৎকারে ডন মিডিয়া গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদ হারুন রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলেছেন। এ ছাড়া গণমাধ্যমের টুঁটি চেপে ধরার পেছনে সরাসরি সেনাবাহিনীকে দায়ী করেন তিনি।

হামিদ হারুন মনে করেন, গণমাধ্যমের অধিকার হরণ করায় সবচেয়ে লাভবান হচ্ছেন পাকিস্তানের ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক ও বর্তমানে তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) দলের প্রধান ইমরান খান। সোমবার প্রচারিত হওয়া বিবিসির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হার্ডটকে হারুন অভিযোগ করেন, দেশটির শক্তিশালী সেনাবাহিনী সংবাদমাধ্যমের জন্য একটা ‘নজিরবিহীন আক্রমণ’। ১৯৪৭ সালের পর থেকেই দেশটির রাজনীতিতে নিয়মিত হস্তক্ষেপ করেছে সেনাবাহিনী। দেশটিতে সামরিক এবং বেসামরিক সরকারের কাছে বারবার ক্ষমতার পালাবদল ঘটেছে। তবে সেনাবাহিনী আগামী নির্বাচনে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি এই পর্যায়ে মনে হচ্ছে দ্বিতীয় সারির নেতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে জোট সরকার গঠনের প্রচেষ্টা হচ্ছে, যেটা ‘ডিপ স্টেট’-এর পরিচালনায় চলবে।’ হামিদ হারুন অল পাকিস্তান নিউজপেপারস সোসাইটিরও সভাপতি।

তবে ‘হার্ডটক’ অনুষ্ঠানের ওই সাক্ষাৎকারের প্রেক্ষাপটে অভিযোগ উঠেছে, হারুন ও তার পত্রিকা সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পক্ষে পক্ষপাতিত্ব করছে এবং ইমরান খানের বিপক্ষে। এ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ তোলার সমালোচনা করেন অনেক সাংবাদিক ও পাঠক।

২৫ জুলাই পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। নির্বাচনকে সামনে রেখে পত্রিকাটি ‘সেন্সরশিপের’ মুখোমুখি হচ্ছে। এমনকি ভয় দেখানোর অভিযোগও পাওয়া গেছে। নির্বাচনের নেতৃত্ব নিয়ে সহিংসতা এবং রাজনৈতিক বিতর্কের ঝড় উঠেছে পাকিস্তানে।

বিবিসির ‘হার্ডটক’ অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন সাংবাদিক স্টিফেন সাকুর। হামিদ হারুন তাকে বলেন, সামরিক বাহিনী তার পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে কাজ করছে। গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। অবশ্য এমন অভিযোগ অনেক আগে থেকেই বিরোধী দল ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা করে আসছিলেন। হামিদ হারুনের সাক্ষাৎকার যেন সেই বিতর্ককে উসকে দিল। অনুষ্ঠানে স্টিফেন সাকুর হারুনকে বলেন, ডন পত্রিকাকে অনেকে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের পক্ষে বলে মনে করে? এ বিষয়ে তিনি কী মনে করেন? জবাবে হারুন বলেন, এটি ডনের বিরুদ্ধে একটি সমন্বিত অপপ্রচার। এদিকে ডন পত্রিকার সিনিয়র কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, দেশটির কয়েকটি ক্যান্টনমেন্টে পত্রিকাটির বিলি বন্ধ করা হয়েছে। লাহোরের সংবাদপত্র বিক্রেতা ও দোকানদাররা নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন, সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তাদের ডন পত্রিকা বিক্রি না করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ডন সম্পাদক জাফর আব্বাস বলেছেন, মার্শাল ল’র চাইতে এবারের অবস্থা খারাপ। এখন প্রকাশ্যে গণতন্ত্র বিরাজ করছে। বাস্তবে চলছে সেলফ-সেন্সরশিপ। বিবিসি।

 

সর্বশেষ খবর