শুক্রবার, ১০ আগস্ট, ২০১৮ ০০:০০ টা

নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও ইরানের সঙ্গে ব্যবসা চায় ইইউ

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার পরও ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো যাতে ইরানের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে পারে, সে জন্য নতুন বিধি চাইছে ইইউ। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞা’ থেকে কোম্পানিগুলোকে রক্ষা করা কঠিন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান ফেডেরিকা মোঘেরিনি এবং ইইউভুক্ত তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের জেরেমি হান্ট, ফ্রান্সের জন-ইভ ল্য দ্রিয়ঁ ও জার্মানির হাইকো মাস যৌথভাবে ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার নিন্দা জানিয়েছেন। একই সঙ্গে দেশটির সঙ্গে অর্থনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করলেও ইইউ, চীন ও রাশিয়ার এই চুক্তি মেনে চলার অঙ্গীকার রয়েছে। সে জায়গা থেকেই ইইউ এখন যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা পাশ কাটিয়ে যেতে চাইছে। তবে বিদ্যমান ব্যবস্থায় ইরানের সঙ্গে লেনদেনকারী ইইউ কোম্পানিগুলোর ওপর ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। ইউরোপীয় কমিশন ইইউ কোম্পানিগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এই ‘সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞাকে’ অবৈধ বিবেচনা করে। আমেরিকা চাইছে ইউরোপীয় গাড়ি নির্মাতা, ব্যাংক ও জ্বালানি কোম্পানিগুলো যেন ইরানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য না করতে পারে। তারা এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের সম্পদ জব্দ করা হতে পারে। এমনকি ইরানের সঙ্গে কার্যক্রম পরিচালনাকারী ইইউ কোম্পানির সঙ্গে লেনদেনের জন্য আমেরিকান কোম্পানিকেও শাস্তি পেতে হবে। এ কারণে আমেরিকান নিষেধাজ্ঞার প্রভাব থেকে সুরক্ষার জন্য কথিত ‘ব্লকিং স্ট্যাচুট’ গ্রহণ করেছে ইইউ। সংশোধিত এই আইন গত মঙ্গলবার কার্যকর হয়েছে। ব্রাসেলসে ইইউ’র একজন কর্মকর্তা ডয়চে ভেলেকে বলেন, ‘ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলোকে সুরক্ষা দেওয়া উচিত। তবে কোম্পানিগুলো কি অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নেবে সেটা তাদের বিষয়। এখানে আমরা কিছু চাপিয়ে দিচ্ছি না। কোনো কোম্পানিকে ইরানে বিনিয়োগের জন্য জোর করা হবে না।’ নতুন আইনের আওতায় ইউরোপিয়ান কোম্পানিগুলো যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে ইউরোপীয় আদালতের দ্বারস্থ হতে পারবে এবং এ জন্য তারা আমেরিকান সরকার ও দেশটির কোম্পানির কাছে ক্ষতিপূরণ চাইতে পারবে। তবে বাস্তবে এটা খুব ঝামেলাপূর্ণ ও ব্যয়বহুল। এ ধরনের মামলার নজির নেই বলে কমিশনের কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যে ইরানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপাতে পারে ওয়াশিংটন। এছাড়া গাড়ি শিল্প, বেসামরিক বিমান পরিবহন, গালিচা ও খাদ্য রপ্তানি, কিছু ধাতু আমদানির ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়বে ইরান। এর কারণে আমেরিকান সেকেন্ডারি নিষেধাজ্ঞার আওতায় ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো কি ক্ষতির মুখে পড়বে তা এখনো নিরূপণ করতে পারেনি ইইউ কমিশন। তবে অনেক কোম্পানি ও ব্যাংক এরই মধ্যে ইরান থেকে কার্যক্রম গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ছে ফরাসি ও ইতালিয়ান কোম্পানিগুলোর ওপরে। ফরাসি জ্বালানি কোম্পানি টোটাল এখন আর ইরানে ৫ বিলিয়ন ডলারের প্রকল্প নিয়ে এগোতে চাইছে না। ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর