শুক্রবার, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

সু চির মুখে অন্য কথা

এখন ভাবলে মনে হয় তা হয়তো ভিন্নভাবে সামাল দেওয়া যেত

সু চির মুখে অন্য কথা

গত বছরের আগস্টে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর ভয়াবহ নির্যাতন চালায় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। সেই ভয়ঙ্কর দমনপীড়নে মারা যায় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা। বার্মিজ সেনারা পুড়িয়ে দেয় গ্রামের পর গ্রাম। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। সেই রোহিঙ্গাদের শরণার্থী জীবনের এক বছর পেরিয়ে যাওয়ার পর মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি বলছেন, রাখাইনের পরিস্থিতি হয়ত আরও ভালোভাবে সামাল দেওয়া যেত। ভিয়েতনামের রাজধানী হ্যানয়ে গতকাল ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামে সু চি বলেন, ‘রাখাইনে যেভাবে সেনাবাহিনী অভিযান চালিয়েছে, এখন ভাবলে মনে হয় তা হয়তো ভিন্নভাবে সামাল দেওয়া যেত।’ দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর চৌকিতে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ এনে গতবছর ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইনে সেনাবাহিনীর ওই দমন অভিযান শুরু হয়। সেই সঙ্গে শুরু হয়  সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সঙ্কট। গত এক বছরে ৭ লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিয়েছে। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও এখনো প্রত্যাবাসন শুরু করা যায়নি। জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থার কর্মীরা বলছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ফেরত যাওয়ার মতো পরিবেশ তৈরি হয়নি। এক্ষেত্রে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলেও বলেছেন কর্মকর্তারা। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর বার্মিজ সেনাবাহিনীর হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশকারী দুই সাংবাদিককে ৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সমালোচনা প্রত্যাখ্যান করে অং সান সু চি বলেন, অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য নয়, বরং আইন ভঙ্গ করার জন্য তাদের শাস্তি হয়েছে। এ সপ্তাহেই জাতিসংঘের একটি সংস্থা মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে দেশটি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। আর সংস্থাটির একটি স্বাধীন তথ্যানুসন্ধান মিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার অভিপ্রায়’ থেকেই রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। অং সান সু চির  এসব বক্তব্যের জবাবে মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস   ওয়াচ বলেছে, তিনি সবকিছুই ভুল বুঝেছেন। হ্যানয়ের সম্মেলনে    সু চি আরও বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমরা যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা চাই, আমাদের হতে হবে  পক্ষপাতহীন। কেবল নির্দিষ্ট কোনো পক্ষকে আইনের শাসনে সুরক্ষা দেওয়ার কথা আমরা বলতে পারি না।’ বিবিসি, এএফপি

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর