শনিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

দিনে দর্জি, রাতে ভয়ঙ্কর খুনি

দিনে দর্জি, রাতে ভয়ঙ্কর খুনি

মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপাল লাগোয়া শিল্পাঞ্চল মান্ডিদীপ এলাকার এক দর্জি আদেশ খামরা। বয়স ৪৮ বছর। শিল্পাঞ্চলটির বাজার এলাকায় একটা পোশাক তৈরির দোকান আছে তার। সবাই তাকে চেনেন ভালো দর্জি হিসেবে। কিন্তু তার অন্য একটা চেহারা সামনে এসেছে কদিন আগে। পুলিশ ওই আদেশ খামরাকেই গ্রেফতারের পর জানা গেছে যে রাত হলেই দর্জির পোশাক ছেড়ে বেরিয়ে আসত তার অন্য এক চেহারা। খুনের নেশা চেপে বসত। আর তিনি একে একে ৩৩টি খুন করেন। আর খুন হওয়া ব্যক্তিরা সবাই ট্রাক ড্রাইভার। পুলিশ জানায়, এ আদেশ খামার-এর কয়েক সঙ্গীও আছে। তারা সবাই মিলে আলাপ জমাত হাইওয়ের ধারে বিশ্রাম নেওয়ার জন্য দাঁড় করানো ট্রাকগুলির চালকদের সঙ্গে। চলত মদ্যপানের আসর। আর তার মধ্যেই, সবার চোখের আড়ালে মদে মিশিয়ে দিত মাদক। এরপর অজ্ঞান সেই সব ট্রাকচালক আর তার সহকারীদের হত্যা করে কোনো নির্জন জায়গায় লাশ ফেলে দিত। ভোপালের পুলিশ ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল ধর্মেন্দ্র চৌধুরী জানান, এ পর্যন্ত ৩৩টি খুনের কথা জানা গেছে। প্রায় সব হত্যাকাণ্ডই কনফার্ম করা গেছে। তবে শুধু মধ্যপ্রদেশ নয় আশপাশের ৫-৬টি রাজ্যেও আদেশ তার সঙ্গীরা খুন করেছে। সবগুলিই খতিয়ে দেখছি আমরা। প্রথম ঘটনাটা ২০১০ সালের। ১১ মাইল বলে একটি এলাকা থেকে দুটি ট্রাক এরা ছিনতাই করেছিল-সেটাই শুরু। মাদক খাইয়ে অজ্ঞান করে দুই চালককেই তারা হত্যা করে লাশ ফেলে দিয়েছিল দুটি আলাদা জায়গায়। আর এই সিরিয়াল কিলার পুলিশের হাতে বেশ অদ্ভুতভাবেই ধরা পড়েছে।

আগস্টের ১৫ তারিখ পুলিশ একটি মৃতদেহ উদ্ধার করে। আবদুল্লাগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা মাখন সিংয়ের মরদেহ সেটি। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে ওই ট্রাকচালক মান্ডিদীপ থেকে লোহা নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। দেহ উদ্ধারের পরে ট্রাকটিকেও খুঁজে পাওয়া যায় হাইওয়ের ধারে। তদন্ত করতে গিয়ে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে জেরা করতেই সে কয়েকজনের নাম বলে। তারপরেই একে একে ৯জন ধরা পড়ে। কিন্তু তখন পর্যন্ত পুলিশ জানত না যে এক এক করে ৩৩টি খুনের কিনারা করতে পারবে তারা আর খোঁজ পাবে এক সিরিয়াল কিলারের। তবে পুলিশ কর্মকর্তা ধর্মেন্দ্র চৌধুরীর কথায়, জেরা করতে গিয়ে কখনই মনে হয়নি অন্য সিরিয়াল কিলারদের মতো মানসিকভাবে অসুস্থ এরা। নিজেরাই এক এক করে তাদের হত্যাকাণ্ডগুলোর কথা স্বীকার করছে। পুলিশ জেরায় আরও জানতে পেরেছে যে আদেশ খামরার এই চক্র শুধুমাত্র ১২ বা ১৪ চাকার বড় ট্রাকের দিকেই নজর দিত - কারণ সেগুলো বেঁচতে পারলে বেশি দাম পাবে।  বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ খবর