মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

পরমাণু অস্ত্র বিদায় জানাবেন কিম

পরমাণু অস্ত্র বিদায় জানাবেন কিম

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইন আজ তিন দিনের সফরে পিয়ংইয়ং যাচ্ছেন। সেখানে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উনের সঙ্গে বৈঠক করবেন। আর এ বৈঠকেই উত্তর কোরীয় নেতা কিম তার দেশের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে ইতিবাচক ইঙ্গিত দেবেন বলে জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে শীর্ষ বৈঠকের আলোচ্য বিষয় স্থির না হলেও পরমাণু অস্ত্রের ভবিষ্যৎই প্রধান বিষয় হতে চলেছে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আর ট্রাম্প ও কিমের প্রস্তাবিত শীর্ষ বৈঠকের আগে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রশ্নে অগ্রগতির আশা করছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট। আবার দক্ষিণ কোরিয়ার নেতা, উত্তর কোরিয়া এক ধাক্কায় সব পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করে ফেলবে, এমনটা আশাও করছেন না। তবে উত্তর কোরিয়া কিছু পরমাণু অস্ত্র ধ্বংস করলে তার বদলে আমেরিকার কাছ থেকে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ আদায় করতে চান মুন জে-ইন। উত্তর কোরিয়া সাড়ম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্টকে স্বাগত জানানোর আয়োজন করেছে। তবে প্রতীকী উষ্ণতার পাশাপাশি দুই নেতার ওপর অগ্রগতির জন্য যথেষ্ট চাপ কাজ করবে। মুন জে-ইন এর আগেও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রশ্নে কিম জং-উনের সুর নরম করতে সফল হয়েছিলেন। এবার সেই লক্ষ্যে সুস্পষ্ট পদক্ষেপের রূপরেখা স্থির করতে চান তিনি। উত্তর কোরিয়া পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করলে সেই পদক্ষেপকে বিশাল সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি আগামী মাসেই হোয়াইট হাউসে কিম জং-উনকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। এর আগে সিঙ্গাপুরে প্রথম ঐতিহাসিক বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে যথেষ্ট ব্যক্তিগত উষ্ণতা দেখা গেছে। ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রভাণ্ডার পুরোপুরি ধ্বংস করার চূড়ান্ত প্রক্রিয়া দেখতে চায়। অন্যদিকে উত্তর কোরিয়া নীতিগতভাবে সেই লক্ষ্যে এগোনোর ইঙ্গিত দিলেও সবার আগে ওয়াশিংটনের মুখে কোরীয় যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক অবসানের ঘোষণা শুনতে চায়। এ ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন মধ্যবর্তী সংসদীয় নির্বাচনও কিছুটা ভূমিকা পালন করছে। ঘরে-বাইরে কোণঠাসা ট্রাম্প নির্বাচনের আগেই পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে বিশাল সাফল্য তুলে ধরতে চান। উত্তর কোরিয়া সে বিষয়টি থেকে ফায়দা তোলার আশা করছে। কিন্তু শুধু হোয়াইট হাউসে কিম জং-উনকে স্বাগত জানিয়ে সেই সাক্ষােক সাফল্য হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন না ট্রাম্প। কিম সরাসরি পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করার ঘোষণা দিলে তাতে কাজ হতে পারে। উত্তর কোরিয়ার করুণ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি কিম জং-উনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ। বর্তমানে একাধিক আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে সে দেশের সঙ্গে বাণিজ্যের পথে নানা বাধা রয়েছে। তা সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট এক উচ্চ পর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধি দল সঙ্গে নিয়ে পিয়ংইয়ং যাত্রা করছেন। নিষেধাজ্ঞার কারণে এ যাত্রায় সহযোগিতা সম্ভব না হলেও পরমাণু অস্ত্র ত্যাগ করলে উত্তর কোরিয়ার ফায়দার মাত্রা তুলে ধরতে চায় দক্ষিণ কোরিয়া।

সর্বশেষ খবর