শিরোনাম
শুক্রবার, ৫ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা ভাবছে ইইউ

মিয়ানমারের লাভজনক বস্ত্রশিল্পও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে। এতে খাতটির হাজারও শ্রমিকের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়বে

রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের ঘটনায় মিয়ানমারের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা ভাবছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। মিয়ানমারের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য ব্লক ইউরোপে দেশটির শুল্কমুক্ত বাণিজ্যসুবিধা তুলে নেওয়া হতে পারে। ইইউয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি ইউরোপীয় কমিশনে আলোচনার পর্যায়ে রয়েছে। মিয়ানমারের লাভজনক বস্ত্রশিল্পও এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসতে পারে। এতে খাতটির হাজারও শ্রমিকের চাকরি ঝুঁকির মধ্যে পড়তে পারে।

খুব শিগগির মিয়ানমারের ওপর ইইউয়ের এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হচ্ছে না। ইইউ মিয়ানমারকে চাপ দিয়ে রোহিঙ্গা মুসলমানদের বিরুদ্ধে নৃতাত্ত্বিক নিধনযজ্ঞ বন্ধ করতে চায়। মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে কি না, এ ব্যাপারে ইইউ ছয় মাসের একটি মূল্যায়ন প্রক্রিয়া চালু করতে পারে। মিয়ানমার যদি মানবিক ও গণতান্ত্রিক লক্ষ্যগুলো পূরণ করে, তাহলে ইইউয়ের সিদ্ধান্তে বদল আসতে পারে। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য নিয়ে’ রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ চালিয়েছে মর্মে আগস্টে জাতিসংঘের দেওয়া প্রতিবেদন এবং দেশটির দুটি সামরিক ইউনিটের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর এবার ইইউ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয়েছে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

ইউরোপীয় কমিশনের এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স লিখেছে, ‘মিয়ানমারের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ হলে জনগণের ওপর এর যে প্রভাব পড়বে তা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কিন্তু মিয়ানমারের সামরিক অভিযানকে গণহত্যা হিসেবে তুলে ধরে প্রকাশিত জাতিসংঘ প্রতিবেদনও আমরা আমলে না নিয়ে পারি না।’ রাখাইনে মানবতাবিরোধী এসব অপরাধের অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াংসহ ছয় জেনারেলের বিচারের সুপারিশ করেছে জাতিসংঘ।গত মাসে নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার তাদের আছে।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তও শুরু করেছেন আইসিসি। ইইউ এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কয়েকজন সদস্যের সম্পদ জব্দ করাসহ ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। তবে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাইয়াংয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়নি ইইউ। এদিকে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনকে ‘একপেশে’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। গতবছর আগস্ট থেকে রোহিঙ্গদের ওপর চালানো সেনা অভিযানকে ‘সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনসিদ্ধ অভিযান’ বলে দাবি করে আসছে মিয়ানমার। গত মাসে নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) জানান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর চালানো সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করার এখতিয়ার তাদের আছে। মিয়ানমারের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তও শুরু করেছেন আইসিসি।

সর্বশেষ খবর