বৃহস্পতিবার, ১১ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

তুর্কি টিভিতে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ ভিডিও চাপে সৌদি আরব

খাসোগির অন্তর্ধান

তুর্কি টিভিতে ‘ষড়যন্ত্রকারী’ ভিডিও চাপে সৌদি আরব

তুরস্কের গণমাধ্যমে কিছু সিসিটিভি ফুটেজ প্রচারিত হয়েছে। যাতে সৌদি ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিক জামাল খাসোগির নিখোঁজ হওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রমাণ রয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। এই ভিডিওতে দেখানো হয়েছে, ইস্তাম্বুলের বিমানবন্দর দিয়ে কথিত সৌদি গোয়েন্দারা ঢুকছে এবং বেরিয়ে যাচ্ছে। সৌদি রাজতন্ত্রের একজন কড়া সমালোচক খাসোগি গত ২ অক্টোবর ইস্তাম্বুলের সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন। কিন্তু তারপর থেকে তিনি নিখোঁজ। তুর্কি কর্তৃপক্ষ বলছে, তাকে খুন করা হয়েছে। তবে সৌদি আরব এই অভিযোগ অস্বীকার করছে। তবে সৌদি কর্তৃপক্ষ যতই অস্বীকার করুক তুরস্ক থেকে শুরু করে গোটা বিশ্ব এতে নাখোশ। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল আল জুবেইরের কাছে ফোন করে খাসোগির অন্তর্ধানের বিষয়ে ‘ব্রিটেন জরুরিভিত্তিতে উত্তর প্রত্যাশা করছে’ বলে জানিয়েছেন। ‘যৌথ মূল্যবোধের ওপর বন্ধুত্ব নির্ভর করে’ এমনটি স্মরণ করিয়েও দিয়েছেন তিনি।

তুর্কি ভিডিওতে কী রয়েছে? : তুর্কি টিভি চ্যানেল আরটিআর-এ যে ভিডিওটি প্রচার করা হয় তা জোগাড় করা হয় সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে। এতে দেখানো হয়েছে, কতগুলো গাড়ি সৌদি কনস্যুলেটের ভিতর ঢুকছে। এর মধ্যে কালো রঙের একটি ভ্যান সম্পর্কে তুর্কি কর্তৃপক্ষ জানতে খুবই আগ্রহী। ভিডিওতে আরও দেখা যায়, একদল সৌদি ইস্তাম্বুল বিমানবন্দর দিয়ে প্রবেশ করছে, হোটেলে চেক-ইন করছে এবং পরে সে দেশত্যাগ করছে। এক দিনেই এসব ঘটনা ঘটে। তুর্কি তদন্তকারীরা দুটি সৌদি গাল্ফস্ট্রিম জেট বিমান সম্পর্কেও খোঁজখবর করছে। এই বিমান দুটি ২ অক্টোবর অবতরণ করেছিল। খাসোগি সেই দিন থেকেই নিখোঁজ রয়েছেন। তুর্কি সংবাদপত্র সাবাহ খবর দিয়েছে যে সৌদি গোয়েন্দা বাহিনীর ১৫ জন সদস্য ওই সাংবাদিকের গুমের সঙ্গে জড়িত বলে তারা জানতে পেরেছে। মার্কিন ওয়াশিংটন পোস্ট একটি সূত্র উদ্ধৃত করে বলেছে, খাসোগিকে হত্যা করতে ১৫ জনের একটি বিশেষ দল পাঠানো হয়েছিল।

কেন সৌদি কনস্যুলেটে খাসোগি? : খাসোগির কনস্যুলেটে আসার উদ্দেশ্য ছিল, তার আগের স্ত্রীকে যাকে তিনি তালাক দিয়েছেন— এ মর্মে একটি প্রত্যয়নপত্র নেওয়া, যাতে তিনি তুর্কি বান্ধবী হাতিস চেঙ্গিসকে বিয়ে করতে পারেন। ২ অক্টোবর খাসোগি যখন কনস্যুলেটে প্রবেশ করেন তার আগে তার মোবাইলটি বান্ধবী  চেঙ্গিসের হাতে দিয়ে যান। চেঙ্গিস সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, খাসোগি এ সময় বিমর্ষ এবং মানসিক চাপের মধ্যে ছিলেন কারণ তাকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। চেঙ্গিস আরও বলেন, খাসোগি তাকে বলেছিলেন যদি তিনি কনস্যুলেট থেকে বের না হন তাহলে তিনি যেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের একজন উপদেষ্টাকে ফোন করেন। তিনি জানান, তিনি কনস্যুলেটের বাইরে অপেক্ষা করেন মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর একটা থেকে মধ্যরাতের পর পর্যন্ত। কিন্তু খাসোগি কনস্যুলেট থেকে বের হননি। পর দিন বুধবার সকাল বেলা কনস্যুলেট খোলার সময় তিনি আবার সেখানে উপস্থিত হন। তখন পর্যন্ত খাসোগির কোনো খোঁজ মেলেনি। তার পর থেকেই তিনি নিরুদ্দেশ। বিবিসি

সর্বশেষ খবর