শনিবার, ১৩ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

‘খাসোগিকে খুন করে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছে’

‘খাসোগিকে খুন করে খণ্ড-বিখণ্ড করা হয়েছে’

তুরস্ক সরকার মার্কিন কর্মকর্তাদের কাছে দাবি করেছে যে তাদের হাতে অডিও এবং ভিডিও প্রমাণ রয়েছে যে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটের ভিতর খুন করা হয়েছে। মার্কিন সরকারি কর্মকর্তারা প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, এসব রেকর্ডিংয়ে দেখা যাচ্ছে সৌদি নিরাপত্তা কর্মকর্তারা কনস্যুলেটের ভিতরে জামাল খাসোগিকে আটক করেছে, তারপর তাকে হত্যা করেছে এবং তার দেহকে খণ্ড-বিখণ্ড করেছে। বিশেষভাবে অডিও রেকর্ডিং থেকে এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সৌদি নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের যোগসাজশের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাওয়া গেছে। একজন মার্কিন কর্মকর্তা, যিনি এই অডিও এবং ভিডিও সম্পর্কে জানেন, তিনি ওয়াশিংটন পোস্টকে বলেছেন, খাসোগি কনস্যুলেটের ভিতরে ঢোকার পর সেখানে কী ঘটেছিল তার একটা ধারণা ওই অডিও রেকর্ড থেকে জানা যাচ্ছে। আপনি শুনতে পাবেন লোকজন আরবিতে কথা বলছে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, আপনি শুনতে পাবেন তাকে (জামাল খাসোগিকে) জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, নির্যাতন করা হচ্ছে এবং পরে খুন করা হচ্ছে। সম্ভবত এরপর দেহ টুকরো টুকরো করে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হয়েছে। এদিকে এ ঘটনা নিয়ে বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মধ্যে রিয়াদে অনুষ্ঠেয় একটি সম্মেলন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ইকোনমিস্টের প্রধান সম্পাদক জ্যানি মিন্টন বেডোসসহ কয়েকজন সাংবাদিক। উবার, ভিয়াকমের মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারাও একই ঘোষণা দিয়েছেন। জামাল খাসোগি এক সময় সৌদি রাজপরিবারের খুব ঘনিষ্ঠজন ছিলেন। কিন্তু বর্তমান সৌদি সরকার এবং যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের কঠোর সমালোচনা করে তিনি সংবাদপত্রে লেখা ছাপিয়েছেন। তিনি ওয়াশিংটন পোস্টের একজন নিয়মিত কলামিস্ট ছিলেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, কিন্তু তুর্কি সরকার এসব অডিও এবং ভিডিও প্রকাশ করতে নারাজ কারণ এতে প্রমাণ হয়ে যাবে যে তুরস্ক একটি বিদেশি দূতাবাসের ভিতরে গুপ্তচরবৃত্তি চালাচ্ছে। সৌদি আরব এই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে। খাসোগির অন্তর্ধানের ঘটনা যৌথভাবে তদন্ত করার জন্য তারা তুরস্কের প্রতি প্রস্তাব দিয়েছে এবং আঙ্কারা সরকার সেই গ্রস্তাব গ্রহণ করেছে বলে ওয়াশিংটন পোস্ট খবর দিয়েছে।

দোলাচলে ট্রাম্প : অর্থনৈতিক কারণেই যুবরাজ সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তারই প্রভাব পড়ছে নিজের দেশের নাগরিক খাসোগি তুরস্কে গিয়ে ‘খুন’ হওয়ার জবাব দেওয়ার ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে এখনো শক্ত অবস্থান নিতে প্রস্তুত নয় ওয়াশিংটন। তবে বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, সাংবাদিকের এভাবে নিখোঁজ হওয়াটা অগ্রহণযোগ্য। ‘আমরা এটা হতে দিতে পারি না। আমরা খুব কঠোর হচ্ছি, সেখানে আমাদের তদন্তকারীরা রয়েছে এবং আমরা তুরস্কের সঙ্গে কাজ করছি। সৌদি বিপক্ষে শক্ত অবস্থান নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের পিছু হটার আরেকটি কারণ মনে করা হচ্ছে সামরিক সরঞ্জাম ক্রয়ের পেছনে তাদের ১১০ বিলিয়ন ডলার খরচ করা। তবে তা আটকে দেওয়ার সক্ষমতা রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র কংগ্রেসের এবং সে ধরনের ইঙ্গিতও মিলেছে। বিবিসি, ডয়েচে ভেলে

সর্বশেষ খবর