শিরোনাম
সোমবার, ২২ অক্টোবর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নতুন গল্প ফেঁদেছে যুবরাজ প্রশাসন

খাশোগি হত্যাকাণ্ড

নতুন গল্প ফেঁদেছে যুবরাজ প্রশাসন

জামাল খাশোগির হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে এবার নতুন ভাষ্য হাজির করেছে সৌদি আরব। এবার দেশটির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানান, ১৫ সদস্যের একটি দল সৌদি আরব থেকে গিয়েছিল, তারা খাশোগিকে ওষুধ দিয়ে অচেতন করে অপহরণের হুমকি দেয়। কিন্তু খাশোগি তাতে বাধা দিলে তখন তাকে জাপটে ধরলে তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। এর আগের দিন খাশোগি সৌদি কনস্যুলেটে ঢোকার পরপরই সেখানে উপস্থিত সৌদি কর্মকর্তাদের সঙ্গে তার ঘোষাঘুষি শুরু হয়। সে সময় পেছন থেকে গলার ওপর দিয়ে হাত দিয়ে জাপটে ধরে নিরস্ত করার সময় তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, দুুটি বিবৃতির মধ্যে কোনো মিল নেই। উল্লেখ্য, এ নিয়ে জামাল খাশোগির ঘটনা সম্পর্কে সৌদি ভাষ্য বেশ কয়েকবার পরিবর্তিত হলো। নতুন বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১৫ সদস্যের সৌদি দলটি ইস্তাম্বুলে এসেছিল জামাল খাশোগিকে অপহরণের উদ্দেশে। তারা খাশোগিকে কনস্যুলেট থেকে তুলে নিয়ে ইস্তাম্বুলের বাইরে একটি ‘সেফ হাউসে’ আটকে রাখবেন এমনই পরিকল্পনা ছিল। খাশোগি যদি সৌদি আরবে ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানান, তখন তাকে ছেড়ে দেওয়ার কথা ছিল।”কিন্তু শুরু থেকে তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যেতে শুরু করে। কারণ তারা ওপরের নির্দেশ অমান্য করে গায়ের জোর খাটাতে শুরু করে। তখন জামাল খাশোগি তার গলা চড়াতে থাকেন। তখন সৌদি দলটি আতঙ্কিত হয়ে তাকে থামানোর চেষ্টা করে। তাকে জাপটে ধরা হয়, তার মুখের ওপর হাত চেপে ধরে চিৎকার বন্ধ করার চেষ্টা করা হয়। তখন তিনি শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যান। তাকে মেরে ফেলার কোনো ইচ্ছা ছিল না। এরপর  খাশোগির কাপড়, সানগ্লাস, অ্যাপল ওয়াচ খুলে তা পরেন মুস্তাফা মাদানি।

কনস্যুলেটের পেছনের দরোজা দিয়ে তিনি এমনভাবে বের হন, যেন মনে হয় যে খাশোগিই কনস্যুলেট থেকে বেরিয়ে গেছেন।”

মৃতদেহ কোথায় : ঘটনা যদি এটাই হয়ে থাকে, তাহলে খাশোগির মৃতদেহ কোথায়? এই সৌদি কর্মকর্তার ভাষ্য অনুযায়ী, ঘটনার পর খাশোগির মৃতদেহ একটি কম্বলে মুড়িয়ে কনস্যুলেটের একটি গাড়িতে তোলা হয়। এরপর একজন ‘স্থানীয় সহযোগীকে’ দায়িত্ব দেওয়া হয় এই মৃতদেহ গুম করার। আর সৌদি দলের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ সালাহ তুবাইগি এই ঘটনার সব চিহ্ন মুছে ফেলার কাজ শুরু করেন। তুরস্কের কর্মকর্তাদের সন্দেহ খাশোগির দেহাবশেষ হয়তো ইস্তাম্বুলের কাছের বেলগ্রাড জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এটি খুঁজে পেলে অনেক রহস্যের জট খুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট নন বিশ্ব নেতারা : খাশোগি হত্যার ঘটনায় সৌদির ব্যাখ্যায় সন্তুষ্ট    হতে পারেননি বিশ্ব নেতারা। এমনকি এ ঘটনায় সৌদির পক্ষে নমনীয় থাকা    মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বলেছেন, খাশোগির ব্যাপারে সৌদি আরবের স্বীকারোক্তি নিয়ে তিনি ‘সন্তুষ্ট নন’। জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল সৌদি ব্যাখ্যাকে ‘যথেষ্ট নয়’ বলে মন্তব্য করেছেন। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দফতর এটাকে ভয়াবহ ঘটনা বলে বর্ণনা করেছে। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোঁ-ইভ ল্য দ্রিয়ঁ ঘটনার আরও তদন্তের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, অনেক প্রশ্নের ‘এখনো উত্তর পাওয়া বাকি’।

সর্বশেষ খবর