শিরোনাম
রবিবার, ৪ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

নেতৃত্ব ছাড়লেও দুর্বল হব না : মেরকেল

নেতৃত্ব ছাড়লেও দুর্বল হব না : মেরকেল

দলের নেতৃত্ব ছেড়ে দিলেও চ্যান্সেলর হিসেবে বর্তমান কার্যকাল পূর্ণ করতে চান জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মেরকেল।  আন্তর্জাতিক নেতা হিসেবে আরও সক্রিয় ভূমিকার ইঙ্গিত দিলেন তিনি। তবে নেতৃত্ব ছাড়লেও দুর্বল হব না। আঙ্গেলা মেরকেল দলীয় নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করায় জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে আলোড়ন শুরু হয়েছে।  অন্যদিকে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও তার মতো অভিজ্ঞ, বিচক্ষণ ও অনেকের কাছে শ্রদ্ধেয় নেতার ভবিষ্যৎ নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছে। তবে চতুর্থ কার্যকালে কিছুটা দুর্বল হয়ে পড়া এই জার্মান চ্যান্সেলর নিজের দলের নেতৃত্ব ছেড়ে আরও দুর্বল হয়ে পড়বেন, এমন আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে। বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন ‘লেম ডাক’ নেতা কতটা কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। মঙ্গলবার বার্লিনে আফ্রিকার নেতাদের সঙ্গে সেই মহাদেশে বিনিয়োগ সংক্রান্ত এক সম্মেলনে মেরকেল নিজে এ বিষয়ে মুখ খুললেন।  মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাতাহ আল-সিসির সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মেরকেল বলেন, দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর তিনি বরং সরকারপ্রধান হিসেবে অন্যান্য বিষয়ে আরও বেশি মনোযোগ দিতে পারবেন।

অনেক রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞই চতুর্থ কার্যকালে আন্তর্জাতিক মঞ্চে  মেরকেলের দুর্বল অবস্থানের পেছনে জার্মানির অভ্যন্তরীণ রাজনীতির বর্তমান জটিল পরিস্থিতিকে দায়ী করে এসেছেন।

 বিশেষ করে ইউরোপীয় নেতা হিসেবে তার ভূমিকা যথেষ্ট সক্রিয় নয়।  ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ইউরোপীয় ইউনিয়নে সংস্কারের যেসব প্রস্তাব পেশ করেছেন, সেই উদ্যোগেও মেরকেল যথেষ্ট জোরালোভাবে অংশ নিতে পারছেন না। তার ওপর আগামী জানুয়ারি মাসে জার্মানি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে সাময়িক দায়িত্ব নিতে চলেছে। দলের নেতার দায়িত্ব ত্যাগ করে মেরকেল সত্যি সরকারপ্রধান হিসেবে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারবেন কিনা, তা বেশ কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করছে। সরকারের স্থায়িত্বের পাশাপাশি দলের পরবর্তী নেতা কে হবেন, তা চ্যান্সেলর হিসেবে তার ক্ষমতা নির্ধারণ করবে। এই মুহূর্তে সেই পদের জন্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে দুজন মেরকেলের ঘনিষ্ঠ, অন্য দুজন বিরোধী হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে এককালে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে পরিচিত ফ্রিডরিশ ম্যারৎস সিডিইউ দলের শীর্ষ নেতা হলে  মেরকেলের পক্ষে কাজ চালিয়ে যাওয়া কঠিন হবে। বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান-এর ক্ষেত্রেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে। অন্যদিকে দলের সাধারণ সম্পাদক আনেগ্রেট ক্রাম্প কারেনবাউয়ার বা নথরাইন ওয়েস্টফেলিয়া রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আরমিন লাশেট দলের নেতা হলে মেরকেল নিশ্চিন্তে চ্যান্সেলর হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। আগামী ৭ ডিসেম্বর হামবুর্গ শহরে সিডিইউ দলের সম্মেলনে নতুন নেতা নির্বাচিত হবেন। এতকাল সাধারণত ঐকমত্যের ভিত্তিতে এই পদে কোনো ব্যক্তি উঠে এসেছেন। ফলে দলের সব অংশের সমর্থন ও যথেষ্ট ভোট পেয়ে তিনি নিশ্চিন্তে এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে পারতেন। এবার চার অথবা আরও বেশি ব্যক্তি যদি শেষ পর্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থেকে যান, সে ক্ষেত্রে ভোট ভাগ হয়ে যাবে এবং সবচেয়ে বেশি সমর্থন পেলেও শীর্ষ নেতার কর্তৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাবে।

 

সর্বশেষ খবর