বৃহস্পতিবার, ৮ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা

চীন-ভারত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ

চীন-ভারত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ

আন্দামান সাগরে যেতে চীন আর মালাক্কা প্রণালি ঘুরতে চাইছে না। তারা এজন্য সহজ পথ খুঁজছে। আর এ লক্ষ্যেই খাল কেটে থাইল্যান্ডকে বিভক্ত করে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের আরও কাছে সরাসরি পৌঁছাতে চাইছে চীন। এ উদ্যোগকে কেন্দ্র করে চীন-ভারত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু হয়েছে। জানা গেছে, এরই মধ্যে চীনা প্রকল্পটি নিয়ে থাইল্যান্ডের সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে। থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুৎ চান-ও-চা সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সামনে  পেশ করেছেন চীনের এই প্রস্তাব। প্রসঙ্গত, মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার মাঝে অবস্থিত সঙ্কীর্ণ মালাক্কা প্রণালি ভূ-কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মুহূর্তে বছরে প্রায় ৮৪ হাজার জাহাজ যাতায়াত করে মালাক্কা প্রণালি দিয়ে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সমীক্ষা বলছে, খুব তাড়াতাড়িই ওই পথে জাহাজ যাতায়াতের সংখ্যা বছরে ১ লাখ ৪০ হাজারে পৌঁছে যেতে পারে। মালাক্কা প্রণালির পরিসর যে রকম, তাতে এক বছরে সর্বোচ্চ ১ লাখ ২২ হাজার জাহাজকে পথ দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। অতএব দক্ষিণ এশিয়ার একটি অর্ধ থেকে অন্য অর্ধে সমুদ্রপথে পৌঁছনোর জন্য বিকল্প পথ খুঁজছে চীন। সে জন্যই থাইল্যান্ডের মধ্যে দিয়ে নতুন খাল কাটার প্রস্তাব দিয়েছে। চীনা সংস্থাগুলো ওই প্রকল্পে ৩ কোটি ডলার বিনিয়োগ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। দক্ষিণ চীন সাগরে বিতর্কিত কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে যে চীনা সংস্থা, সেই লংঘাওকে খাল কাটার দায়িত্ব দেওয়া হবে। থাইল্যান্ড যদি চীনের প্রস্তাব মেনে নেয়, তা হলে অনেক সহজে এবং অনেক তাড়াতাড়ি আন্দামান সাগরে ঢুকে পড়তে পারবে চীনা জাহাজগুলো। চীন সাগর আর আন্দামান সাগরের মাঝের দূরত্ব অন্তত ১২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। এখন মালাক্কা প্রণালি ঘুরে ভারতের দক্ষিণতম বিন্দু ইন্দিরা পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ঢোকে চীন সাগরের দিক থেকে আসা জাহাজগুলো। থাইল্যান্ডের দক্ষিণাংশে প্রস্তাবিত খালটি কাটা হলে আরও অনেকটা উত্তরে নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অনেকটা কাছে পৌঁছাতে পারবে চীনা জাহাজগুলো। কিন্তু বাণিজ্যিক জাহাজগুলোর পাশাপাশি চীনা যুদ্ধজাহাজগুলোও এখনকার চেয়ে অনেক সহজে ও কম সময়ে ভারতীয় জলসীমার খুব কাছাকাছি পৌঁছাতে পারবে বলে আশঙ্কা করছে ভারত। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, খাল কাটার কাজ চলতি বছরে বা ২০১৯-এর গোড়ায় শুরু হলে পরের দশকের শেষ দিকে গিয়ে  শেষ হবে। অর্থাৎ ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি খুঁড়তে বছর দশেক সময় লেগে যাবে। খাল খননে ব্যাংকক যাতে সম্মতি না দেয়, ভারত তা নিশ্চিত করতেই সক্রিয়। আনন্দবাজার

সর্বশেষ খবর