মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ইচ্ছা যাকে ইচ্ছা বরখাস্ত করছেন। এ তালিকায় দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ কমপক্ষে ৬০জন আছেন। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন দেশটির সর্বোচ্চ আইন কর্মকর্তা জেফ সেশনস। মার্কিন এই অ্যাটর্নি জেনারেলকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বুধবার এক টুইটে ট্রাম্প বলেছেন, ‘তার কাজের জন্য অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেশনসকে ধন্যবাদ জানিয়েছি আমরা এবং তার শুভকামনা করি!’ বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়ার প্রভাব বিস্তার নিয়ে চলা তদন্ত থেকে সেশনস নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে বারবার তার শীর্ষ আইন কর্মকর্তার সমালোচনা করে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এখন ভারপ্রাপ্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্বপালন করবেন সেশনসের চিফ অব স্টাফ ম্যাথু হুইটেকার। এ পদে স্থায়ী নিয়োগ পরে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। আলাবামার সাবেক সিনেটর ও প্রায় প্রথম থেকেই ট্রাম্পের প্রতি সমর্থন জানানো সেশনস তার পদত্যাগপত্রে পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তটি যে তার নিজের ছিল না তা পরিষ্কার করেছেন। তারিখবিহীন এক চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘প্রিয় প্রেসিডেন্ট মহোদয়, আপনার অনুরোধে আমি আমার পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি।’
মূলত সেশনসের সঙ্গে বিবাদের শুরুটা হয়েছিল ২০১৭ সালের মার্চ মাসে। ট্রাম্পের সমর্থকদের মধ্য থেকে দল ত্যাগ করাদের মধ্যে সর্বশেষ নাম যোগ হলো সেশনসের। তখনই সেশনস রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে যে তদন্ত হচ্ছিল সেখান থেকে সরে আসেন এবং এই দায়িত্ব তার অধীনস্থ রড রোজেনস্টেইনকে দেন। এরপর থেকেই প্রকাশ্যে ট্রাম্প সেশনসের বিরুদ্ধে নানা ধরনের সমালোচনামূলক কথা বলতে থাকেন। ২০১৭ সালে নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি এই তদন্ত থেকে সরে যাবেন এই কথা আমাকে আগে বললে আমি তাকে এই দায়িত্ব দিতাম না। আমি অন্য কাওকে এই কাজের জন্য নিতাম।’
প্রশ্ন শুনেই অগ্নিশর্মা, সাংবাদিকের প্রবেশ নিষেধ : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কিছু কিছু গণমাধ্যমের প্রতি এমনিতেই ক্ষ্যাপা। এমন গণমাধ্যমের মধ্যে রয়েছে সিএনএন। সেই টিভির এক সাংবাদিক প্রেসিডেন্টকে অপ্রিয় প্রশ্ন করে বসেন। আর যায় কই! ওই সাংবাদিকের হোয়াইট হাউসে ঢোকাই বন্ধ হয়ে গেল। সিএনএন-এ কর্মরত ওই সাংবাদিকের নাম জিম অ্যাকোস্টা। তার বিরুদ্ধে হোয়াইট হাউস ইনটার্নের সঙ্গে অভব্য আচরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। সেই অজুহাতে বাতিল করা হয়েছে তার প্রেস পাস। যা দেখিয়ে হোয়াইট হাউসে ঢোকার অনুমতি পান সাংবাদিকরা। ওই সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প এ সাংবাদিককে ‘অভদ্র, ভয়ানক ব্যক্তি’ বলে তিরস্কার করেছেন। বিতর্কের সূত্রপাত বুধবার। মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিবৃতি দিতে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠক ডেকেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেখানে তার দিকে বেশ কিছু প্রশ্ন ছুড়ে দেন জিম অ্যাকোস্টা। যার মধ্যে ছিল শরণার্থী বিতর্ক এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রুশ হস্তক্ষেপ ও সেই সংক্রান্ত তদন্ত। প্রশ্ন শুনেই চটে যান ট্রাম্প। জিম অ্যাকোস্টার হাত থেকে মাইক কেড়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। নির্দেশ শুনে মাইক কেড়ে নিতে আসেন হোয়াইট হাউসের এক তরুণী। পরে জোর করেই মাইক কেড়ে নিয়ে চলে যায় ওই তরুণী।