শনিবার, ১৭ নভেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
পুরনো রূপে উত্তর কোরিয়া

নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা

নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা

নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর জেনারেলদের সঙ্গে উ. কোরীয় নেতা কিম জং-উন—এএফপি

মাস পাঁচেক আগে সিঙ্গাপুরে শান্তি আলোচনায় বসেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। তাতে কিম বলেছিলেন তিনি কোরীয় উপদ্বীপে পারমাণবিক অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ করবেন। আর এটাই ছিল আলোচনার মূল ইস্যু। কিন্তু সেই মূল ইস্যুকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিলেন উত্তর কোরিয়ার নেতা। দেশটি ‘নতুন করে তৈরি করা একটি উচ্চ প্রযুক্তির কৌশলসম্পন্ন’ অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালিয়েছে। গতকাল দেশটির নেতা কিম জং উনের উপস্থিতিতে নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। তবে এটি ঠিক কী ধরনের অস্ত্র তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। আল জাজিরা জানিয়েছে, এটি কোনো পারমাণবিক কিংবা ক্ষেপণাস্ত্র সংক্রান্ত পরীক্ষা ছিল না। আর উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যম কেসিএনএর বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, এটি অনেকদিন আগেই মোতায়েন করা হয়েছে। কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ অস্ত্র পরীক্ষা সফল হওয়ায় উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন কিম। তিনি বলেন, ‘দেশের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়াতে যুদ্ধ উপকরণ নির্মাণসংশ্লিষ্ট শ্রমিক ও বিজ্ঞানীরা আরও একটি বড় ধরনের কাজ করল।’ দক্ষিণ কোরিয়া নতুন এ অত্যাধুনিক অস্ত্রের বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে। এ বিষয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোনো পশ্চিমা দেশের মন্তব্য জানা যায়নি। উত্তর কোরিয়ার দাবি, একাডেমি অব ন্যাশনাল ডিফেন্স সায়েন্সে নতুন অস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়েছে। কিম জং উনের প্রয়াত বাবা কিম জং ইল জীবদ্দশায় এ ধরনের অস্ত্র তৈরির পরিকল্পনা করেছিলেন। কেসিএনএ’র প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চলাকালে বাবার শূন্যতা বোধ করছিলেন উন।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ওয়াশিংটন ও পিয়ংইয়ংয়ের মধ্যে আলোচনায় স্থবিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে দ্বিতীয় আরেকটি শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের বিষয়ে চলতি সপ্তাহে দুই দেশের মধ্যে একটি বৈঠকের পরিকল্পনা থাকলেও সেটি হয়নি। এর মধ্যে উত্তর কোরিয়া বিভিন্নভাবে তার দেশে যুক্তরাষ্ট্র যে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে তা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সেদিকে কর্ণপাত না করায় পুরনো যুদ্ধংদেহী মনোভাবই দেখাল উত্তর কোরিয়া। এদিকে ওয়াশিংটন ডিসিভিত্তিক একটি থিঙ্ক ট্যাঙ্ক অভিযোগ করেছে, পিয়ংইয়ং গোপনে অন্তত ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির কাজ চালাচ্ছে। ওই গোপন ঘাঁটিগুলোর মধ্যে ১৩টিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলেও দাবি তাদের। সিউল ও ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তারা ওই ঘাঁটিগুলোর বিষয়ে আগে থেকেই জ্ঞাত। এগুলোকে ট্রাম্প-কিম চুক্তির বরখেলাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে না বলেও ইঙ্গিত তাদের।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন অস্ত্রের পরীক্ষার মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটনের সঙ্গে পিয়ংইয়ংয়ের নতুন করে উত্তেজনা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র আগেই হুমকি দিয়ে রেখেছে, পারমাণবিক অস্ত্র কিংবা দীর্ঘ পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র বাদ দিতে উত্তর কোরিয়া দৃঢ় পদক্ষেপ না নেওয়া পর্যন্ত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা শিথিল হবে না।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর