মঙ্গলবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০১৮ ০০:০০ টা
খাশোগি হত্যাকাণ্ড

হোয়াটস অ্যাপ বার্তায় খুলতে পারে জট

সৌদির হাতে নৃশংসভাবে খুন সাংবাদিক জামাল খাশোগি তার প্রকাশিত লেখায় সৌদি রাজতন্ত্র ও যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেও তা ছিল পরিমিত। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে ওয়াশিংটন পোস্টের এই কলাম লেখক এ ব্যাপারে কোনো রাখঢাক রাখেননি। সৌদি সরকারের ভয়ে কানাডা প্রবাসী সৌদি নাগরিক আবদুল আজিজের সঙ্গে হোয়াটস অ্যাপে খাশোগির কথোপকথন তো তাই বলে। আর তার এসব বার্তার সূত্র ধরে খুলতে পারে হত্যাকাণ্ডের জট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম হোয়াটস অ্যাপে সৌদি থেকে নির্বাসিত ওই অ্যাক্টিভিস্টের সঙ্গে আদান-প্রদান হওয়া চার শতাধিক বার্তা প্রকাশ করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে হত্যার ঠিক এক বছর আগে তিনি এসব বিষয় নিয়ে আবদুল আজিজের সঙ্গে আলোচনা করেন। আবদুল আজিজ নিজেই তাদের মধ্যে চালাচালি হওয়া ওই বার্তাগুলো প্রকাশ করেছেন।

আবদুল আজিজকে দেওয়া ওই বার্তাগুলোতে খাশোগি যুবরাজ সালমানকে কখনো ‘জানোয়ার’ আবার কখনো ‘প্যাক-ম্যান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। সালমানের বিষয়ে খাশোগি বলেন, তিনি এমন একজন ব্যক্তি যে তার পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে তাকেই তিনি নিশ্চিহ্ন করে দেন। এমনকি ওইসব ব্যক্তি তার সহযোগী কিংবা ঘনিষ্ঠ হলেও মাফ পান না। সিএনএনের হাতে আজিজ ও খাশোগির মধ্যে আদান-প্রদান হওয়া ওইসব বার্তার মধ্যে ভয়েস রেকর্ডিং, ছবি এবং ভিডিও রয়েছে। সৌদি রাজতন্ত্রের ক্ষমতাধর যুবরাজ সালমান একজন ব্যক্তিকে কতটা সমস্যায় ফেলতে পারেন বা অনেকেই কেমন ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন তার চিত্র পাওয়া যায় এসব বার্তায়। গত বছরের মে মাসে সৌদির বেশ কিছু অ্যাক্টিভিস্টদের বিরুদ্ধে যুবরাজ সালমান ধরপাকড় ও গ্রেফতার অভিযান শুরু করলে সেই সময় আবদুল আজিজকে দেওয়া এক বার্তায় যুবরাজকে নিয়ে খাশোগি বলেন, ‘যত লোক তার ক্ষতি করবে, তত লোককেই সে ‘খেয়ে’ ফেলবে। আমি অবাক হবো না, তার গুণগান গেয়েছে এমন ব্যক্তিরাও যদি তার দ্বারা অত্যাচারিত হয়।’ সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেছেন আবদুল আজিজ। তিনি বলেন, খাশোগিসহ তারা সৌদি রাজতন্ত্রকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি করাতে অনলাইনে যুবকদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করার পরিকল্পনাও করছিলেন। ‘খাশোগি বিশ্বাস করতেন এর পেছনে সালমানই হলো মূল ইস্যু ও সমস্যা। এই ধাপ্পাবাজকে অবশ্যই থামাতে হবে।’ কিন্তু চলতি বছরের আগস্টে তারা যখন বুঝতে পারে তাদের বার্তা আদান-প্রদানের বিষয়টির ওপর সৌদি কর্তৃপক্ষ নজরদারি করছে তখন খাশোগি বিপদের পূর্বলক্ষণ অনুধাবন করতে পারেন। খাশোগি তার বন্ধু আবদুল আজিজকে বলেন, ‘ভয় পেও না, আল্লাহ আমাদের পাশে আছে।’ আর এ ঘটনার ঠিক দুই মাস পর সৌদির পাঠানো ১৫ সদস্যের কিলিং স্কোয়াডের হাতে নির্মমভাবে খুন হন খাশোগি। হত্যার দুই মাস পার হয়ে গেলেও আজও সেই হত্যাকাণ্ডের সঠিক কোনো তথ্য বেরিয়ে আসেনি।—সিএনএন

 

সর্বশেষ খবর