দেশভাগের পর ধর্মের ভিত্তিতে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করা উচিত ছিল বলে মনে করেন দেশটির মেঘালয় হাই কোর্টের বিচারপতি সুদীপ রঞ্জন সেন। গত সোমবার একটি রায় দিতে গিয়ে বিচারপতি সেন বলেন, ‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের পর পাকিস্তান তাদের ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে এবং ভারতকেও হিন্দু রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া উচিত ছিল কিন্তু এই দেশ ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবেই রয়ে গেছে।’  বিচারপতি আরও জানান, ‘আমি এটা পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, ভারতকে আরেকটা ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা করা উচিত নয়, তাহলে এটা ভারত তথা গোটা বিশ্বের কাছে সর্বনাশ ডেকে আনবে। আমি নিশ্চিত যে, কেবল নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারই এর গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারবে এবং দেশ যাতে ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত না হয় সে ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।’ অমন রানা নামে এক ব্যক্তির দায়ের করা মামলায় ৩৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ রায় দান করে কেন্দ্রকে সংশোধিত নাগরিকত্ব বিল নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আর্জিও জানিয়েছেন ভারতের ওই বিচারপতি। তিনি বলেন ‘বাংলাদশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান-প্রতিবেশী তিন দেশে ধর্মীয় নির্যাতনের শিকার হয়ে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, বৌদ্ধ, পার্শি, খ্রিস্টান, খাসি, জয়ন্তিয়া ও গারো সম্প্রদায়ের যারা ভারতে এসেছেন তাদের কোনো ধরনের প্রশ্ন বা নথি পরীক্ষা ছাড়াই ভারতের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। তারা যাতে সসম্মানে এ দেশে বসবাস করতে পারেন তাও নিশ্চিত করা হোক। এ বিষয়ে সময় নষ্ট না করে শিগগির এই বিলকে আইনে রূপ দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের অনুরোধ করছি। পাশাপাশি অন্য যে কোনো রাষ্ট্রে বসবাসরত ভারতীয় বংশোদ্ভূত হিন্দু-শিখদের দেশে ফেরা মাত্রই ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের ব্যবস্থা করা হোক।’ তবে ভারতে বসবাসকারী শান্তিকামী মুসলিমদের বিরুদ্ধে নয় বলেও জানান তিনি। বিচারপতি জানান, ‘কয়েক প্রজন্ম ধরে দেশের আইন মেনে যেসব মুসলিম এ দেশে বসবাস করছেন, সেই মুসলিম ভাই বা বোনদের বিরুদ্ধে আমি নই, তাদেরও এ দেশে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের অনুমতি দেওয়া উচিত।’