বৃহস্পতিবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৯ ০০:০০ টা

নতুন সমস্যায় ট্রাম্প

নতুন সমস্যায় ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে দেশটির দুই কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে পুরো সমর্থন পেয়ে আসছেন। ফলে তার একান্তই নিজের সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়নে তেমন বাধায় পড়তে হয়নি। কিন্তু সেই ‘স্বাধীনতা’র অনেকটা সমাপ্তি ঘটছে আজ থেকেই। কারণ আজ থেকে মার্কিন কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণভার চলে যাচ্ছে বিরোধী ডেমোক্র্যাটদের হাতে। গত দুই বছর কংগ্রেসের উভয় কক্ষই ছিল ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টির নিয়ন্ত্রণে।

ট্রাম্পের প্রায় প্রতিটি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে প্রতিনিধি পরিষদের অনুমোদন লাগে। নইলে সেটি বাস্তবায়ন সম্ভব হয় না। শুধু তাই নয়, আর্থিক বাজেটও পাস করতে হয় প্রতিনিধি পরিষদে। আর এই কারণেই মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্ত দেওয়াল তৈরিতে ট্রাম্পের কর্মসূচি আটকে গেছে। তার এই সমস্যা যে আগামী দিনে আরও বাড়বে তা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হাড়ে হাড়ে টেরও পেতে শুরু করেছেন। সেই কথার প্রথম লক্ষণ পাওয়া গেছে মঙ্গলবারও। এ দিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বাজেট প্রশ্নে অব্যাহত অচলাবস্থা ও ফেডারেল সরকারের ‘বন্ধ’ থামাতে মতবিনিময়ের জন্য রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতাদের হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি উভয় দলের নেতাদের বুঝিয়ে বলতে চান সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য তার প্রস্তাবিত ‘দেওয়াল’ এত জরুরি কেন। কিন্তু তার এই কথায় সায় দেয়নি ডেমোক্র্যাটরা। এই ‘দেওয়াল’ নিয়ে মতান্তরের কারণে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে ফেডারেল সরকারের এক- চতুর্থাংশের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে আছে। ট্রাম্প মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তৈরির জন্য প্রায় ৪১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা (পাঁচ বিলিয়ন ডলার) অনেক দিন ধরে চেয়ে আসছেন কিন্তু কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদ ট্রাম্পকে জানিয়েছেন তারা সাকল্যে ১০ হাজার ৮০০ কোটি টাকা (১.৩ বিলিয়ন ডলার) দিতে রাজি। আর এই কারণে ফেডারেল সরকার চলার জন্য যে বিল পাস করতে হয়নি। ফলে সরকারের কাজ বন্ধ হয়ে আছে। এ কারণে বড় দিনে হোয়াইট হাউসে একা কাটাতে হয়েছে ট্রাম্পকে। ডেমোক্র্যাটরা এই ‘বন্ধের’ জন্য সব দায় চাপিয়েছেন ট্রাম্পের ঘাড়ে। গত মাসে হোয়াইট হাউসে এক প্রকাশ্য বৈঠকে ট্রাম্প জানান, সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য তিনি সরকারের কাজকর্ম বন্ধ করে দিতে প্রস্তুত। এই কাজের জন্য তিনি গর্বিত বোধ করবেন। কিন্তু তার অনুগত সমর্থকরা ছাড়া রিপাবলিকান দলের প্রধান নেতাদের কেউই ট্রাম্পের এই বন্ধের সমর্থনে এগিয়ে আসেননি। ডেমোক্র্যাটদের একগুঁয়ে মনোভাবের পরিপ্রেক্ষিতে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স সমঝোতার একটি চেষ্টা করেছিলেন। তিনি প্রস্তাব রেখেছিলেন, আড়াই বিলিয়ন ডলার দিলেই ট্রাম্প সন্তুষ্ট হবেন। কিন্তু সে প্রস্তাব ডেমোক্র্যাটরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এদিকে নতুন কংগ্রেসে সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার (আজ) প্রতিনিধি পরিষদের প্রথম দিনই তারা সরকারের কাজকর্ম পুনরায় আরম্ভের জন্য বাজেট বরাদ্দ প্রস্তাব পাস করবেন। তারা দুটি ভিন্ন ভিন্ন প্রস্তাব গ্রহণ করবেন। প্রথম প্রস্তাবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ছাড়া বাকি সব ফেডারেল সরকারের এক বছরের বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে। কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে একই রকম একটি প্রস্তাব আগেই গৃহীত হয়েছে। তাদের দ্বিতীয় প্রস্তাবে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের জন্য আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ব্যয় বরাদ্দ মঞ্জুর করা হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর