শুক্রবার, ২২ মার্চ, ২০১৯ ০০:০০ টা

ব্রেক্সিট তিন মাস পেছাতে চান তেরেসা মে

ব্রেক্সিট তিন মাস পেছাতে চান তেরেসা মে

ব্রেক্সিটের সময় তিন মাস বাড়ানোর অনুরোধ করে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) চিঠি পাঠিয়েছেন। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, আগামী ২৯ মার্চ ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ প্রক্রিয়া (ব্রেক্সিট) চূড়ান্ত করার কথা ছিল। কিন্তু দেশটি এখনো কোনো ব্রেক্সিট চুক্তিতে পৌঁছতে পারেনি। মে সর্বশেষ দুই দফা তার খসড়া ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে পার্লামেন্টে হাজির হলেও তা বিপুল ভোটের ব্যবধানে প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর তৃতীয় আরেকটি ভোট করার পরিকল্পনাও ব্যর্থ হওয়ার পর মে ইইউ’র কাছে এ সময় চাইলেন।

এমন বিলম্বের জন্য তিনি ব্রিটিশ জনগণের কাছে ব্যক্তিগত অনুশোচনা প্রকাশ করেছেন। বেশ কয়েকজন মন্ত্রী তেরেসা মেকে ব্রেক্সিট বিলম্বিত করার বিষয়ে সতর্ক করেছেন। তারা বলেছেন, ব্রেক্সিট বিলম্বিত করার মাধ্যমে ব্রিটেনকে যদি দীর্ঘ সময় ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয় তাহলে তারা তেরেসা মের সরকার থেকে পদত্যাগ করতে প্রস্তুত। বিবিসি জানায়, ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্কের কাছে বুধবার লেখা চিঠিতে মে লেখেন, তিনি ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে এ সপ্তাহে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাউস অব কমন্সে ভোট করতে চাইলেও স্পিকারের বাধার কারণে তা পারেননি। কিন্তু চুক্তিটি আবার ভোটের জন্য কমন্সে তোলার ইচ্ছা তার আছে। চুক্তিটি পাস হলে তা অনুমোদন করতে পার্লামেন্টের আরও কিছু সময় দরকার হবে। এর জবাবে ডোনাল্ড টাস্ক বুধবার ব্রেক্সিট শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। শর্তে তিনি বলেছেন, ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের পূর্বনির্ধারিত তারিখ পিছিয়ে দিয়ে কিছুটা বিলম্ব মেনে নেওয়া তখনই সম্ভব হবে যখন যুক্তরাজ্যের এমপিরা প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তির পক্ষে ভোট দেবেন।

২০১৬ সালের ব্রেক্সিট গণভোটের রায় অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৯ মার্চ রাত ১১টার পর থেকে আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থাকার কথা নয় যুক্তরাজ্যের। ব্রেক্সিট পরবর্তীকালে ইইউর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের শর্ত নির্দিষ্ট করে একটি খসড়া চুক্তি প্রস্তুত করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাজ্যের হাউস অব কমন্সে তা সংখ্যাগরিষ্ঠ সংসদ সদস্যের সমর্থন পায়নি। মূল সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের সীমান্ত ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়টি। মে আবার ইইউ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সংসদ সদস্যদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে পারে এমন একটি চুক্তি উপস্থাপন করেছেন গত ১২ মার্চ। সেটিও প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী সপ্তাহে আবারও চুক্তিটি হাউস অব কমন্সে ভোটাভুটির জন্য তোলার কথা রয়েছে।

আগামী ২৯ মার্চে ব্রেক্সিট কার্যকর না করে ৩০ জুনের আগ পর্যন্ত অপেক্ষার বিষয়ে ডোনাল্ড টাস্কের ভাষ্য, ‘এটি সম্ভাবনাময়।’ কিন্তু ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের দিনক্ষণ ২৩ মের পরে নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাবের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ‘রাজনৈতিক ও আইনি’ বিষয়। ২৩ মে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর চুক্তির বিষয়ে ডোনাল্ড টাস্ক বলেছেন, বর্তমানে চুক্তিটি যেভাবে তৈরি তাতে কোনো পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে না। তবে গত সপ্তাহে স্ট্রসবার্গে মেকে ইইউর পক্ষ থেকে যেসব আইনি নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। এটি ব্রিটিশ এমপিদের সমর্থন পাওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

সর্বশেষ খবর