ইসরায়েলে ইরানি হামলার আশঙ্কা করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর আজকালের মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘর্ষ বেধে যেতে পারে মনে করছেন মার্কিন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা। ইতোমধ্যেই তিনি পৌঁছে গিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যে। হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে হত্যার পর থেকে বদলা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরান।
অ্যাক্সিয়োস নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওয়াশিংটন এবং জেরুজালেম মনে করছে যে কোনো মুহূর্তে ইরান এবং তার সহযোগী দেশগুলো ইসরায়েলে হামলা চালাতে পারে। গত সপ্তাহেই হত্যা করা হয়েছে হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়া এবং হিজবুল্লাহর কমান্ডার ফুয়াদ সুকরকে। সেই হত্যার বদলা নিতেই হামলা শুরু করতে পারে ইরান। আর এই হামলায় সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে লেবানন মদতপুষ্ট হিজবুল্লাহ গোষ্ঠী। আর সেক্ষেত্রে ইসরায়েলও যে চুপ থাকবে না তা সহজেই অনুমেয়।
মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি ক্রমে যুদ্ধের দিকে গড়াচ্ছে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা। এখন পর্যন্ত কোন কোন বিষয়গুলো সংঘর্ষের ইঙ্গিত দিচ্ছে? গতকাল মধ্যপ্রাচ্য সফরে গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড জেনারেল মাইকেল কুরিল্লা।
পেন্টাগন একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য একটি ফাইটার জেট স্কোয়াড্রন পাঠাচ্ছে আমেরিকা। ইসরায়েলকে সাহায্য দিতেই যুক্তরাষ্ট্র সামরিক সজ্জা প্রস্তুত করছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, মধ্যপ্রাচ্যে ইতোমধ্যেই মোতায়েন করা হয়েছে দুটি ব্রিটিশ সামরিক জাহাজ। স্ট্যান্ডবাই রয়েছে রয়্যাল এয়ার ফোর্সের হেলিকপ্টারও। এ দিকে শনিবার মধ্যরাতে ইসরায়েলের উত্তর প্রান্তে বেইট হিলেল শহরে এক ডজন রকেট নিক্ষেপ করেছে হিজবুল্লাহ। তবে এই রকেট প্রতিরোধ করছে ইসরায়েলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। কোনো হতাহতের খবর মেলেনি।
নেতানিয়াহু চাইছে ‘আব্রাহাম জোট’ সক্রিয় করতে : হামাস শীর্ষনেতা ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পর প্রত্যাঘাতের হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে ইরান। তার পর থেকেই পশ্চিম এশিয়ার কূটনৈতিক গতিবিধির দিকে নজর গোটা বিশ্বের। সম্ভাব্য হামলার আশঙ্কায় ইসরায়েলের তরফে প্রতিমুহূর্তে যোগাযোগ রাখা হচ্ছে আমেরিকা এবং ব্রিটেনের সঙ্গে। আমেরিকা ইতোমধ্যেই আরও সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই আবহে আবারও চর্চা শুরু হয়েছে ‘আব্রাহাম জোট’ নিয়ে।
‘আব্রাহাম জোট’ শব্দটি সাম্প্রতিককালে প্রথম শোনা যায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মুখে। আমেরিকার কংগ্রেসে বক্তব্য রাখার সময় পশ্চিম এশিয়ায় স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য ‘আব্রাহাম জোট’-এর প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন তিনি। এই শব্দটি এসেছে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরের ‘আব্রাহাম চুক্তি’ থেকে। ইসরায়েল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মরক্কো ও সুদানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কে স্থিতাবস্থা আনতে এই চুক্তি হয়েছিল। চুক্তির মধ্যস্থতায় ছিল আমেরিকা। নেতানিয়াহু চাইছেন পশ্চিম এশিয়ায় ইসরায়েলের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক সঙ্গীদের নিয়ে একটি জোট তৈরি করতে।