পুরো উনুন হয়ে ওঠছে মধ্যপ্রাচ্য। গাজায় হামাস ও ইসরায়েল যুদ্ধ থামানো নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সাড়ে নয় মাস কেটে গেছে। এই যুদ্ধ কবে থামবে তার উত্তর এখনো অধরা। এর মাঝে আগুনে ঘি ঢেলেছে ইরানের বুকে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যু। যা নিয়ে বদলার আগুনে ফুঁসছে ইরান। তেহরানের সমর্থনপুষ্ট হুতিরা মাঝেমধ্যেই ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের জাহাজে হামলা চালাচ্ছে। অপর দিকে মাঝেমধ্যে ফেঁসে উঠছে হিজবুল্লাহ। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে মধ্যপ্রাচ্যে আর যুদ্ধবিমান বহনকারী রণতরি পাঠাল যুক্তরাষ্ট্র। ইরানকে চাপে ফেলে গোটা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে ওয়াশিংটন।
গত জুলাই মাসে ইরানের নতুন প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গিয়ে খুন হন হামাসের রাজনৈতিক প্রধান হানিয়া। এই হত্যার বদলা নিতে ইজরায়েলের ওপর আক্রমণের নির্দেশ দেন ইরানের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লা খামেনি। ফলে যে কোনো সময় ইহুদি দেশটির ওপর ভয়ংকর হামলা চালাতে পারে তেহরান। এর জেরে চলতি মাসের প্রথম দিকে তড়িঘড়ি ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট নামে একটি যুদ্ধবিমান বহনকারী রণতরি পাঠায় মার্কিন সেনাবাহিনী। এবার তার জায়গায় মধ্যপ্রাচ্যে গিয়েছে ইউএসএস আব্রাহাম লিঙ্কন।
জানা গিয়েছে, ইউএসএস আব্রাহাম লিঙ্কন নামের রণতরিতে রয়েছে এফ-৩৫সি ওএফ/এ-১৮ ব্লকথ্রি ফাইটার জেট। এই নৌবহরটি পরিচালনার দায়িত্ব মার্কিন সেনার সেন্ট্রাল কমান্ডের কাঁধে (সেন্টকম)। লোহিত সাগর থেকে শুরু করে এডেন উপসাগর, দক্ষিণ চীন সাগরেও মোতায়েন রয়েছে সেন্টকম। বুধবার এ নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আগস্ট মাসের শুরুতেই জানা গিয়েছিল, মধ্যপ্রাচ্যে থাকা মার্কিন কর্মকর্তা ও ইসরায়েলকে সহায়তা করতে যুদ্ধজাহাজ ও ফাইটার জেট পাঠাচ্ছে আমেরিকা।
গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামলা চালায় হামাস। তার পর থেকেই গাজায় হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে ইসরায়েল। কিন্তু এই যুদ্ধ এবার মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে বড় আকার নিচ্ছে। হামাসকে সমর্থন করে ইসরায়েলের বুকে হামলা চালাচ্ছে লেবাননের হিজবুল্লাহ। ইরানের মদতে সক্রিয় ইয়েমেনের হুতিরাও। পালটা মার দিচ্ছে ইহুদি দেশটিও। এবার ইসরায়েলের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়াতে চলেছে ইরান। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে আরেক ভয়ংকর যুদ্ধের মেঘ ঘনাচ্ছে।
লেবাননের ১০ স্থানে হামলা : এক রাতেই লেবাননের ১০টির বেশি স্থানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। সামাজিক মাধ্যম এক্সে এক পোস্টে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, তাদের ফাইটার জেট লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে ১০টির বেশি এলাকায় হিজবুল্লাহর টার্গেটে হামলা চালিয়েছে। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর বেশ কিছু গুদাম, রকেট লঞ্চার এবং অন্যান্য অবকাঠামো রয়েছে এমন স্থানে হামলা চালানো হয়েছে। তবে ওই হামলা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। এর আগে ইসরায়েলের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, চিহিন, কফার কিলা, আইতা আল শাব এবং আলমা আস-শাব এলাকায় হামলা চালিয়েছে তাদের সৈন্যরা। লেবাননভিত্তিক আল মায়াদিন টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, খিয়াম, কফার শৌবা, মাহবিব, আইতা আল শাব, জাবকিন, রামিয়াহ, কাউথারিয়েত এই সাইয়াদ এবং কফার কিলা এলাকায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ফের ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হিজবুল্লাহর হামলা : ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে সরাসরি হামলার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। লেবাননভিত্তিক এই সশস্ত্র সংগঠন জানিয়েছে, তারা উত্তর ইসরায়েলের রামোট নাফতালি এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক ব্যারাক এবং অধিকৃত গোলান মালভূমির জাউরাতে বেশ কিছু আর্টিলারি সাইটে কাতিউশা রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে ওই দুই স্থানে হামলা চালানো হয়। হিজবুল্লাহর দাবি এসব স্থানে তাদের রকেট সরাসরি আঘাত হেনেছে। কয়েকদিন আগেও ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে সরাসরি হামলার দাবি করেছে হিজবুল্লাহ। লেবাননভিত্তিক এই সশস্ত্র সংগঠন জানিয়েছে, তারা উত্তর ইসরায়েলের রামোট নাফতালি এলাকায় ইসরায়েলি সামরিক ব্যারাক এবং অধিকৃত গোলান মালভূমির জাউরাতে বেশ কিছু আর্টিলারি সাইটে কাতিউশা রকেট দিয়ে হামলা চালিয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার রাতে ওই দুই স্থানে হামলা চালানো হয়। হিজবুল্লাহর দাবি এসব স্থানে তাদের রকেট সরাসরি আঘাত হেনেছে। কয়েকদিন আগেও ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে হিজবুল্লাহ। তার আগে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলে অবস্থিত বেইত হিলেলে অবস্থিত দেশটির একটি সামরিক ব্যারাকে রকেট হামলা চালানো হয়।