দখলদার ইসরায়েলের হামলায় দুই দিনে গাজায় ৬১ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও ১৬২ জন। গতকাল এ তথ্য জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নতুন করে আরও ৬১ জন নিহত হওয়ার মাধ্যমে গাজায় চলমান আগ্রাসনে ৪০ হাজার ৯৩৯ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হলো। অন্যদিকে আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪ হাজার ৬১৬ জনে।
গত বছরের ৭ অক্টোবর হামাস ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। ওইদিন ইসরায়েলের বিভিন্ন অবৈধ বসতি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এ ছাড়া তারা প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। এরপরই গাজায় বর্বর হামলা চালানো শুরু করে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে গত কয়েক মাস ধরে যুদ্ধবিরতি চুক্তির চেষ্টা চলছে। তবে দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হচ্ছে না। গত সপ্তাহেও গাজার রাফা ক্রসিং থেকে ছয় জিম্মির মৃতদেহ উদ্ধার করে ইসরায়েলি সেনারা। যদি যুদ্ধবিরতির চুক্তি হতো তাহলে এই ছয় জিম্মির মধ্যে তিনজন প্রথম ধাপেই ছাড়া পেতেন। গাজায় বর্বর হামলা চালানো ছাড়াও সেখানে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে রেখেছে ইসরায়েল। এ কারণে সেখানকার সাধারণ মানুষ প্রয়োজনীয় পণ্য পাচ্ছেন না। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা জানিয়েছে, গাজায় এখন পর্যন্ত অপুষ্টিতে ভোগে ৩৭ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে নাবলুসের কাছে বেইতা শহরে ইহুদি বসতি স্থাপন সম্প্রসারণের প্রতিবাদে শুক্রবার পশ্চিমতীরে প্রতিবাদ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন তুরস্ক বংশো™ূ¢ত এক মার্কিন নারী আয়সেনুর ইজগি ইগি (২৬)। কিন্তু ইসরাইলি সেনাবাহিনী তাকে গুলি করে হত্যা করেছে। এ হত্যাকান্ডের পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে জাতিসংঘ। জবাবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, ওই এলাকায় গুলিতে একজন বিদেশি নিহত হওয়ার পর তারা রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে। এতে বলা হয়, একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসিকে বলেছেন, ওই এলাকায় তিনি প্রতিবাদ বিক্ষোভকালে দুটি গুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন। এ হত্যার বিষয়ে প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, এ ঘটনার একটি পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করছি আমরা। ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের জবাবদিহিতায় নিতে হবে। সব অবস্থায় বেসামরিক লোকজনের নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে হবে। একই সঙ্গে এ হত্যার তদন্ত দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের মুখপাত্র সিন সাভেত বলেন, একজন মার্কিন নাগরিকের করুণ মৃত্যুতে যুক্তরাষ্ট্র গভীরভাবে হতাশ। তিনি আরও বলেন, আমরা ইসরায়েল সরকারের কাছে আরও তথ্য চেয়েছি। একই সঙ্গে এর তদন্ত করার আহ্বান জানিয়েছি। গুলির পরপরই ওই স্থান থেকে যে ফুটেজ পাওয়া গেছে তাতে দেখা যায়, দ্রুততার সঙ্গে আয়সেনুরকে একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রতিবাদ বিক্ষোভে উপস্থিত ছিলেন ইহুদি-ইসরায়েলি কর্মী জোনাথন পোলাক। তিনি বিবিসির নিউজ আওয়ার প্রোগ্রামে বলেছেন, ভবনের ছাদ থেকে সেনাদের তিনি দেখেছেন টার্গেট করতে। তিনি দুটি গুলির শব্দ শুনেছেন। দুটি গুলির মধ্যে সময়ের ব্যবধান এক বা দুই সেকেন্ড। তার ভাষায়- আমি শুনতে পেলাম কেউ একজন আমার নাম ধরে ডেকে ইংরেজিতে বলছে- আমাদের সাহায্য করো। আমাদের সাহায্যের প্রয়োজন। আমি তাদের দিকে দৌড়ে গেলাম। বিবিসি ও আলজাজিরা