কলকাতার আরজি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালের নারী ছাত্রীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় উত্তাল গোটা পশ্চিমবঙ্গ। সুবিচারের দাবিতে এক মাস ধরে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখেছে জুনিয়র চিকিৎসকরা। অচল অবস্থা কাটাতেই গতকাল বিকালে রাজ্য সরকারের সচিবালয় নবান্নে জুনিয়র চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। এদিন বিকালে জুনিয়র ডাক্তারদের বহনকারী একটি বাস নবান্নে এসে পৌঁছায়। ওই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ৩২ জনের জুনিয়র চিকিৎসক। কিন্তু তাদের দাবি ছিল গোটা বৈঠকে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে লাইভ সম্প্রচার করতে হবে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় সেটা কোনোভাবেই সম্ভব নয়।
ফলে দুই পক্ষের অনড় মনোভাবের কারণে সেই বৈঠক আর হয়নি। দুই ঘণ্টা পরে নবান্ন সভাঘর থেকে সংবাদ সম্মেলন করে কালীঘাটের বাড়ি ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী।
আর সেই সংবাদ সম্মেলন থেকে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দেন শীর্ষ আদালত লাইভ স্ট্রিমিং করতে পারে, কিন্তু আমরা তা পারি না। যেহেতু এই মামলাটি ভারতের শীর্ষ আদালতের বিচারাধীন, তাই কোনোভাবেই লাইভ স্ট্রিমিং সম্ভব নয়।
গত ৯ আগস্ট ওই ঘটনার পর সুবিচার চেয়ে ৩৪ দিন ধরে আন্দোলন করছেন রাজ্যের সর্বস্তরের মানুষ। নৃশংস এই হত্যাকান্ডের তদন্ত চালাচ্ছে দেশটির কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সি সিবিআই। আর এই তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসছে সিবিআইয়ের হাতে। সামনে আসছে রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তরে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ। এমন অবস্থায় রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির পদত্যাগের দাবিতে রাজপথে নেমেছে রাজ্যের মানুষ। গতকালের এই বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় প্রশাসনকেই দায়ী করেছেন আন্দোলনকারী জুনিয়ার চিকিৎসকরা।।
তবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে, আমাদের মা-মাটি-মানুষের সরকারকে অনেক অসম্মান, অপমান করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক কুৎসা, অপপ্রচার রটানো হয়েছে।’ তিনি বলেন, মানুষের স্বার্থে আমি নিজে পদত্যাগ করতেও রাজি আছি। আমার মুখ্যমন্ত্রীর পদ চাই না। কিন্তু আমি চাই মানুষ বিচার পাক। তিলোত্তমা বিচার পাক। সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাক।