বিশ্বব্যাপী রাজনৈতিক অস্থিরতা, আর্থিক মন্দা ও যুদ্ধাবস্থার মতো জটিল মুহূর্তে বসতে যাচ্ছে জাতিংসঘের সাধারণ অধিবেশন। দুই বছরের অধিক সময় ধরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি আগ্রাসন, নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যে বৃহৎ যুদ্ধের শঙ্কার বিরাজমান পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সমবেত হতে যাচ্ছেন বিশ্বনেতারা। অধিবেশন শুরুর আগের দিন ইসরায়েল লেবাননে ব্যাপক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এতে ৩২০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৩০০ জন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, আজ নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের শুরু হওয়া অধিবেশনে এসব সহিংস পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার ইস্যুটি সর্বাগ্রে গুরুত্ব পাবে। গতকাল দ্য নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, সার্বিক বিবেচনায় গত বছরের অধিবেশনের তুলনায় এবার বিশ্বজুড়ে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা বেড়েছে। তখন ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ও সুদানে সংঘাত পটভূমিতে ছিল। এবারের চিত্র ভিন্ন। গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ও জবাবে গাজায় ইসরায়েলের নৃশংসতায় যে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে, সেটা এবার আলোচনায় প্রাধান্য পেতে পারে।
যুদ্ধের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে খোদ জাতিসংঘের ওপরই। তাদের রেকর্ড ২২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী গাজা যুদ্ধে নিহত হয়েছেন। তাদের মানবিক সহায়তার উৎসগুলোয় পর্যাপ্ত অর্থ জমা পড়ছে না। জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় পর্যাপ্ত তহবিল নেই তাদের। তা ছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে সংঘাত মোকাবিলায় জাতিসংঘের নেতারা মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকায় গিয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে ব্যর্থ হচ্ছেন। এ প্রসঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জগুলো আমাদের সামর্থ্যরে চেয়ে বেশি গতিতে এগোচ্ছে। নিয়ন্ত্রণের বাইরে ভূরাজনৈতিক বিভাজন আমরা দেখেছি। এটা ঘটেছে গাজা, ইউক্রেন, সুদান ছাড়াও অন্যান্য স্থানে। এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শেষবারের মতো ভাষণ দেবেন। তাঁর সময়ে যুক্তরাষ্ট্র গাজায় বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব ভেটো দিয়ে আটকে দিয়েছিল। গাজায় যেখানে একটি যুদ্ধবিরতি আনতে ব্যর্থ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, সেখানে নতুন করে লেবাননে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল।