গাজা-ইসরায়েল যুদ্ধের মধ্যেই গোটা মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে তীব্র উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে ইসরায়েলের লেবাননে হামলা। এর ফলে গত দুই সপ্তাহে নাটকীয় পরিবর্তন এসেছে মধ্যপ্রাচ্যে। দুই দিন আগে লেবাননের রাজধানী বৈরুতের কাছে হিজবুল্লাহর ভূগর্ভস্থ সদর দপ্তরে বিমান হামলায় তাদের প্রধান নেতা নাসরুল্লাহকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। এই ১৩ দিনের চিত্র তুলে ধরেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
১৭-১৮ সেপ্টেম্বর : লেবাননজুড়ে হিজবুল্লাহ সদস্যদের পেজার ও ওয়াকিটকি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে, যার ফলে অন্তত ৩৭ জন নিহত হন। আহত হয় কয়েক হাজার মানুষ। এই হামলার জন্য ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে দায়ী করা হয়েছে।
২০ সেপ্টেম্বর : লেবাননের রাজধানী বৈরুতের দক্ষিণাঞ্চলে হিজবুল্লাহর একটি ঘাঁটিতে হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ৫৫ জন নিহত হন, যার মধ্যে হিজবুল্লাহর এক শীর্ষ কমান্ডারও ছিলেন।
২৩ সেপ্টেম্বর : লেবাননে ব্যাপক বোমাবর্ষণ শুরু করে ইসরায়েল। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর দাবি, লেবাননজুড়ে হিজবুল্লাহর ১৩০০ স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করে এসব হামলা চালানো হয়। এতে এক দিনে ৫৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। দিনটিকে কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
২৫-২৬ সেপ্টেম্বর : লেবাননে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলার মধ্যেই কিছু পাল্টা হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানান বিশ্বনেতারা। সাময়িক যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানায় অনেকে। কিন্তু ইসরায়েল এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে। ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা ৬৩০ ছাড়িয়ে যায়।
২৭ সেপ্টেম্বর : জাতিসংঘে ভাষণ দেওয়ার সময় নেতানিয়াহু হিজবুল্লাহকে ‘পরাজিত’ করার প্রতিশ্রুতি দেন। তার আগে, বৈরুতে হিজবুল্লাহ সদর দপ্তরে হামলার নির্দেশ দেন তিনি। তার ওই নির্দেশের পর হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। এতে হিজবুল্লাহপ্রধান হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হন।
২৮ সেপ্টেম্বর : শনিবার ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী-আইডিএফ দাবি করে নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। নাসরুল্লাহ হত্যাকান্ডে র পর মধ্যপ্রাচ্য সংঘাত কি বৃহত্তর যুদ্ধে রূপান্তরিত হতে পারে? লেবাননে বসবাসরত সাধারণ মানুষের জন্য পরিস্থিতি এখন কেমন? এ বিষয়গুলো অবশ্য হিজবুল্লাহ, ইসরায়েল এবং ইরান কী পদক্ষেপ নেয় তার ওপর নির্ভর করছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।