প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় হেলেনের ক্ষত না শুকাতেই ধেয়ে আসছে হারিকেন মিল্টন। ঘণ্টায় ১৮০ মাইল বেগে এই হারিকেন বুধবার সন্ধ্যায় ফ্লোরিডার টেম্পা এলাকায় আছড়ে পড়বে বলে ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার জানিয়েছে। উল্লেখ্য, মেক্সিকো উপসাগরে সৃষ্ট মিল্টনের গতিবেগ ক্রমান্বয়ে বেড়ে ক্যাটাগরি ৫ এ পরিণত হয়েছে। তা বাংলাদেশি অধ্যুষিত টেম্পা সিটিতে আঘাত হানার পর বিস্তৃত হবে ফ্লোরিডা স্টেটের অন্য এলাকায়। আবহাওয়া দপ্তরের বুলেটিনে সোমবার রাতে আরও বলা হয়েছে যে, কোনো কোনো এলাকায় ১৫ ইঞ্চি পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি ১০ থেকে ১৫ ফুট পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাসের প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। অর্থাৎ হারিকেন হেলেনের চেয়েও ভয়ংকর রূপে মিল্টন হামলে পড়বে জনপদে। টেম্পা বে সিটির মেয়র জ্যানে ক্যাস্টোর স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবারের মধ্যে সবাইকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে পড়ার নির্দেশ জারি করেছেন। ১০০ মাইল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে এই হারিকেন টেম্পার উত্তরাঞ্চল, বনিটা বীচ, ফোর্ট মায়ার্স, হিলসবরো, লি, মানাটি, প্যাসকো, চার্লটি, সাইট্রাস কাউন্টির সবাইকে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ত্যাগের আহ্বান জানানো হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
সেন্ট্রাল টেম্পা এবং উপকূলীয় এলাকার লোকজনকেও নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গতকাল থেকেই এসব অঞ্চলের এয়ারপোর্টসমূহে বিমান ওঠানামা করবে না। ফ্লোরিডা ইমারজেন্সি ম্যানেজমেন্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, সারাসোটা এবং পিনেলাসের অংশবিশেষও হারিকেন মিল্টনের আওতায় থাকতে পারে।
ফ্লোরিডার স্টেট গভর্নর রন ডিসান্টিস বলেছেন, আগের যে কোনো সময়ের ভয়ংকর দুর্যোগের চেয়েও ভয়াবহ হতে পারে মিল্টনের আঘাত। তাই ফ্লোরিডার পশ্চিম উপকূলীয় এলাকার সবার উচিত হবে যত দ্রুত সম্ভব বাড়ি ছাড়া।
ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী মেক্সিকো মহাসাগরের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলে সৃষ্ট হারিকেন মিল্টন ঘণ্টায় ৯ মাইল বেগে সমুদ্র অতিক্রম করে পূবে ধাবিত হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বও ক্যাটাগরি ৪ আকারের হারিকেন হেলেন আছড়ে পড়েছিল ফ্লোরিডায়। সেটির আঘাতে বিস্তীর্ণ এলাকা লন্ডভন্ড হওয়া ছাড়াও মারা গেছে ২০ জন। এ ছাড়া হেলেনের আঘাতে জর্জিয়া, নর্থ ও সাউথ ক্যারলিনা, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, টেনেসি এবং ফ্লোরিডাসহ বিভিন্ন স্টেটে মৃত্যু হয়েছে ২৩০ জনের। হেলেনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পুনর্বাসনের কাজ চলার মধ্যেই মিল্টনের উদ্ভব হওয়ার সংবাদে ফ্লোরিডাসহ আশপাশের স্টেটের প্রশাসনও ঘাবড়ে গেছে।