কবে এবং কীভাবে সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তুগুলোতে আঘাত হানা হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইসরায়েলি বাহিনী যে কোনো মুহূর্তে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুত। সাম্প্রতিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরায়েল ইরানের ওপর হামলার লক্ষ্যমাত্রা ছোট করে এনেছে। এনবিসি নিউজের এক প্রতিবেদনে নাম প্রকাশ না করা মার্কিন কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে এ তথ্য জানানো হয়েছে। তারা জানান, ইরানের পারমাণবিক স্থাপনা বা কোনো শীর্ষ কর্মকর্তাকে গুপ্তহত্যার লক্ষ্য ইসরায়েলের আছে বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
ইরান ১ অক্টোবর ঝাঁকে ঝাঁকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইসরায়েলে হামলা চালায়। ইসরায়েল এ হামলার কী প্রতিক্রিয়া করে তা দেখতে পুরো মধ্যপ্রাচ্য রুদ্ধশ্বাসে অপো করে আছে। ইরান জানিয়েছে, লেবাননে ইসরায়েলের আক্রমণ এবং তাদের মিত্র হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়াকে তেহরানে ও হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহকে বৈরুতে হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েলে হামলা চালিয়েছে তারা। ইরানের হামলায় ইসরায়েলের তেমন উল্লেখযোগ্য কোনো য়তি হয়নি। মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েল কখন প্রতিক্রিয়া জানাবে যুক্তরাষ্ট্র তা জানে না। কিন্তু মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আদেশ দেওয়া মাত্রই ইরানে হামলা চালানোর জন্য ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী পুরোপুরি প্রস্তুত হয়ে আছে। ওই কর্মকর্তারা জানান, প্রতিশোধমূলক হামলার বিষয়ে ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আরও তথ্য শেয়ার করলেও অভিযানের গোপনীয়তা রায় তারা বিস্তারিত অনেক কিছু জানায়নি।
ইসরায়েলি হামলার প্রতিক্রিয়ায় তাৎণিভাবে ইরান কোনো পাল্টা হামলা চালালে তা থেকে নিজেদের মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থান ও স্থাপনাগুলো রায় প্রস্তুত হয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্ত ইসরায়েলের ইরান অভিযানে তারা সরাসরি সামরিক সমর্থন জানাবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরামন্ত্রী লয়েড অস্টিন শুক্রবার রাতে ইসরায়েলের প্রতিরামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে কথা বলেছেন। তারা ইসরায়েলের সম্ভাব্য হামলা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তবে গ্যালান্ট মূল বিষয়গুলো নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন কি না, তা পরিষ্কার হয়নি। ইরানে প্রতিশোধমূল হামলা নিয়ে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষ হওয়ার পর অস্টিনকে ফোন দেন গ্যালান্ট। কিন্তু মন্ত্রিসভার বৈঠকে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যস্থলগুলো নিয়ে যেসব আলোচনা হয়েছে গ্যালান্ট সেগুলো শেয়ার করেননি। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু টেলিফোনে কথা বললেও তারা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেননি বলে মার্কিন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
ইরানে ভয়াবহ সাইবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল : ইরানের ভয়াবহ ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর ধারণা করা হচ্ছিল দ্রুতই ইসরায়েল এর জবাব দেবে। কিন্তু দুই সপ্তাহ পার হলেও ইসরায়েল এখনো বিষয়টিকে হুঁশিয়ারির মধ্যেই রেখেছে। এর মধ্যে ইরানে ভয়ংকর সাইবার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর নির্দেশে এই সাইবার হামলার কবলে পড়েছে ইরানের পুরো ব্যবস্থা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইরান সরকার ও তাদের পারমাণবিক ঘাঁটিতে সাইবার হামলা হয়েছে। এর মাধ্যমে পরমাণু সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করেছে ইসরায়েল। ইরানের সুপ্রিম কাউন্সিল অব সাইবারস্পেসের প্রাক্তন সেক্রেটারি ফিরোজাবাদির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে ইরানের সরকারের তিনটি শাখাই এই সাইবার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। হামলার মুখে পড়েছে বিচার বিভাগ, আইনসভা ও নির্বাহী বিভাগ। যেসব প্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে তাদের তালিকা থেকে বোঝা যায় আঘাত কতটা গভীর। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, বন্দর পরিবহন নেটওয়ার্ক, জ্বালানি বিতরণ ব্যবস্থা এবং মিউনিসিপ্যাল নেটওয়াকর্ত এ সাইবার হামলার শিকার হয়েছে।